মানে! শাঁক বাজানোর সঙ্গে শরীরের ভাল-মন্দের কোনও সম্পর্ক আছে নাকি? আলবাৎ
আছে বন্ধু। তাই তো এই প্রবন্ধটি লেখার সিদ্ধান্ত নেওয়া। একাধিক গবেষণায়
দেখা গেছে শাঁক বাজানোর সময় গলা থেকে পা পর্যন্ত শরীরের প্রতিটি পেশি বেশি
মাত্রায় সংকুচিত এবং প্রসারিত হয়। সেই সঙ্গে শরীরের অন্দরেও নানা পরিবর্তন
হতে থাকে, যে কারণ একাধিক উপকার মেলে। দূরে পালায় বেশ কিছু জটিল রোগও। এই
যেমন ধরুন...
১. চোখ,কান এবং নাকের জন্য উপকারি এক্সারসাইজ:
১. চোখ,কান এবং নাকের জন্য উপকারি এক্সারসাইজ:
বেশ কিছু স্টাডি অনুসারে নিয়মিত শঙ্খ বাজালে চোখ, নাক এবং কানে রক্তের
সরবরাহ বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে শরীরের এই অংশের পেশির কর্মক্ষমতা এতটা বৃদ্ধি
পায় যে একদিকে যেমন দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়ার আশঙ্কা কমে, তেমনি শ্রবণর
ক্ষমতার উন্নতি ঘটতেও সময় লাগে না। তাই শরীরকে কর্মক্ষম রাখতে শাঁক বাঁচাতে
ভুলবেন না যেন!
২. জন্ডিসের মতো রোগ দূরে থাকে:
২. জন্ডিসের মতো রোগ দূরে থাকে:
প্রাচীন আয়ুর্বেদ গ্রন্থে এমনটা উল্লেখ পরাওয়া গেছে যে শাঁকের মধ্যে সারা
রাত জল রেখে দিয়ে সকালে ঘুম থেকে উঠে সেই জল পান করলে জন্ডিস এবং হজমের
সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা কমে। সেই সঙ্গে দাঁত এবং হাড় শক্তপোক্ত হয়। আসলে
শাঁকের শরীরে থাকা ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম এবং সালফার জলে মিশে
শরীরে প্রবেশ করার কারণেই এই উপকারগুলি পাওয়া যায়।
৩. সারা শরীরে রক্ত প্রবাহের উন্নতি ঘটে:
৩. সারা শরীরে রক্ত প্রবাহের উন্নতি ঘটে:
শাঁক বাজানোর সময় জোরে ফু দেওয়ার কারণে মুখের পেশির যেমন সংকোচন-প্রসারণ
ঘটে, তেমনি পা পর্যন্ত শরীরে প্রতিটি পেশিতে সচলতা বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে
সারা দেহে রক্ত প্রবাহেরও উন্নতি ঘটে। ফলে প্রতিটি কোষে অক্সিজেন সমৃদ্ধ
রক্ত পৌঁছে গিয়ে সার্বিকভাবে শরীরের কর্মক্ষমতার উন্নতি ঘটে।
৪. শরীরের প্রতিটি চক্র উজ্জীবিত হয়ে ওঠে:
ত্বকের উপরে জমে থাকা মৃত কোষেদের সরিয়ে সুন্দরী হয়ে উঠতে চান? কাজে
লাগান এই ঘরোয়া পদ্ধতিগুলিকে!
ত্বকের উপরে জমে থাকা মৃত কোষেদের সরিয়ে সুন্দরী হয়ে উঠতে চান? কাজে
লাগান এই ঘরোয়া পদ্ধতিগুলিকে!
সাপের স্বপ্ন দেখা কি শুভ লক্ষণ?
সাপের স্বপ্ন দেখা কি শুভ লক্ষণ?
কোন কোন গাছের পাতা দিয়ে পুজো না করলে শিব ঠাকুর মারাত্মক রুষ্ঠ হয়
জানা আছে!
কোন কোন গাছের পাতা দিয়ে পুজো না করলে শিব ঠাকুর মারাত্মক রুষ্ঠ হয়
জানা আছে!
Featured Posts
৪. শরীরের প্রতিটি চক্র উজ্জীবিত হয়ে ওঠে:
শাঁক বাজানোর সময় শরীরের ভিতরে যে কম্পন তৈরি হয় তাতে মানব দেহের সাতটি
চক্রের ভারসাম্য ঠিক থাকে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই কোনও রোগই শরীরের ধারে
কাছে ঘেঁষতে পারে না। একাধিক প্রাচীন গ্রন্থে উল্লেখ পাওয়া যায়, আমাদের ভাল
বা মন্দ থাকার সঙ্গে এই সাতটি চক্রের নিবিড় যোগ রয়েছে। তাই তো প্রতিটি
চক্রের মধ্যে ভারসাম্য থাকাটা একান্ত প্রয়োজন। আর এই কাজে আপনাকে সাহায্য
করতে পারে একটা ছোট্ট অভ্যাস, তা হল শাঁক বাজানো। প্রসঙ্গত, আমাদের
শরীরের অন্দরে থাকা সাতটি চক্র হল যথাক্রমে, মূলধারা, সোয়াধিস্টান,
মানিপুরখ, অনাহত, বিশুদ্ধি, অজনা, সহস্ররা এবং ব্রহ্মারন্দ্র।
৫. শরীরে একাধিক পেশির কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়:
৫. শরীরে একাধিক পেশির কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়:
শাঁক বাজানোর সময় ইউরিনারি ট্রাক্ট, ব্লাডার, তলপেট, বুক এবং ঘাড়ের পেশির
সঞ্চাসন-প্রসারণ ক্ষমতা বাড়তে শুরু করে। ফলে সার্বিকভাবে দেহের
কর্মক্ষমতা যেমন বাড়ে, তেমনি শরীরের এই বিশেষ অংশগুলিতে কোনও রোগ মাথা
চাড়া দিয়ে ওঠার আশঙ্কাও হ্রাস পায়।
৬. ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার হাত থেকে মুক্তি মেলে:
৬. ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার হাত থেকে মুক্তি মেলে:
শুনতে হয়তো একটু আজব লাগতে পারে। কিন্তু একথা প্রমাণিত হয়েছে যে শাঁক
বাজানোর সময় সারা ঘরে যে আওয়াজ ছড়িয়ে পরে, তার প্রভাবে সেখানে উপস্থিত
প্রতিটি ব্যাকটেরিয়া এবং ক্ষতিকর জীবাণু মারা যায়। ঠিক যেমনটা মন্দিরে
ঘন্টা বাজালে হয়ে থাকে। তাই নিজেকে এবং পরিবারের বাকি সদস্যদের যদি নানাবিধ
সংক্রমণ এবং রোগের থেকে দূরে রাখতে চান, তাহলে প্রতিদিন সকাল-বিকাল শাঁক
বাজানো শুরু করুন। দেখবেন উপকার মিলবে।
৭. কথা বলার সমস্যা দূর হয়:
গবেষণায় দেখা গেছে যাদের স্পষ্ট ভাবে কথা বলতে সমস্যা হয় অথবা তোৎলামোর
ধাত রয়েছে, তারা যদি নিয়মিত শাঁক বাজান তাহলে দারুন উপকার মিলতে পারে। আসলে
শাঁক বাজানোর সময় থাইরয়েড গ্ল্যান্ড, গলার পেশি এবং ভোকাল কর্ডের
বারংবার সংকোচন-প্রসারণের কারণে ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই
কথা বলার সমস্যা কমে যেতে শুরু করে।
৮. ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়:
খেয়াল করে দেখবেন শাঁক বাজানোর সময় আমাদের জোরে জোরে শ্বাস নিতে হয়।
এমনটা প্রতিদিন করতে করতে এক সময়ে গিয়ে ফুসফুসের ক্ষমতা মারাত্মক বেড়ে
যায়। আজকাল পরিবেশ দূষণের কারণে লাং যেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তাতে এই
ছোট্ট অভ্যাসটা কিন্তু সুস্থ জীবন পেতে অনেকভাবে সাহায্য করতে পারে।
প্রসঙ্গত, যোগ গুরুরাও মেনে নিয়েছেন প্রতিদিন প্রাণায়ম করলে যে উপকার
পাওয়া যায়, সেই একই রকমের উপকার মেলে শাঁক বাজালেও।
৯. রেকটাল মাসলের কর্মক্ষমতা বাড়ে:
বেশ কিছু স্টাডি অনুসারে নিয়মিত শাঁক বাজালে রেকটাল মাসলের কর্মক্ষমতা এতটা
বেড়ে যায় যে শরীরের এই অংশ কোনও রোগের খপ্পরে পরার সম্ভাবনা কমে।
প্রসঙ্গত, বয়সের সঙ্গে সঙ্গে প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়ম মেনেই রেকটাল পেশি
দুর্বল হতে শুরু করে। কিন্তু নিয়মিত যদি শাঁক বাজান যায়, তাহলে এমন ধরনের
সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে না বললেই চলে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন