বুধবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮

কী করে বুঝবেন শরীরে রয়েছে ভিটামিন-বি১২ এর ঘাটতি

ভিটামিন-বি১২ এর ঘাটতি দেখা দেওয়ার ব্যাপারটি সম্পর্কে অনেকেই খুব একটা সচেতন নয়। কিন্তু এটা খুবই সাধারণ একটি শারীরিক সমস্যা। সাধারণত যেকোন বয়সের, যেকোন লিঙ্গের মানুষের মাঝেই ভিটামিন-বি১২ এর ঘাটতি দেখা দিতে পারে। তবে ৪০-৬০ বছর বয়সী নারীদের মাঝে এই সমস্যাটি বেশী দেখা দেয়। অনেকক্ষেত্রে নিরামিষাশীদের শরীরেও ভিটামিন-বি১২ এর ঘাটতি দেখা দিয়ে থাকে।

প্রশ্ন করতেই পারেন, কেন এই ভিটামিন-বি১২ শরীরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ? মূলত এটা হচ্ছে অন্যতম প্রধান উপাদান যা শরীরে রক্তকোষ তৈরিতে সাহায্য করে থাকে। স্নায়ুর গঠন এবং ডিএনএ এর উপরেও ভিটামিন-বি১২ এর লক্ষণীয় প্রভাব রয়েছে। শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় এই ভিটামিনের অভাব দেখা দিলে কী লক্ষণ দেখা দিয়ে থাকে তা তুলে ধরা হলো আজ।

মাথা হালকা বোধ হওয়া

ঘনঘন যদি মাথা হালকা বোধ হওয়ার সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে তবে সেটার ব্যাপারে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। হুট করে মাথা ঘোরার সমস্যা দেখা দেওয়া স্বাভাবিক। যেকোন কারণেই এমনটা হতে পারে। তবে এই সমস্যাটি প্রতিনিয়ত দেখা দিতে থাকলে বুঝতে হবে শরীরে ভিটামিন-বি১২ এর ঘাটতি দেখা দিয়েছে।

অবশ অনুভূত হওয়া

অনেক সময় হাত অথবা বা একই ভঙ্গীতে লম্বা সময় ধরে রেখে দেওয়ার ফলে অবশ অনুভুত হতে থাকে। যেটা খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। রক্ত চলাচলে বাধাগ্রস্থ হওয়ার ফলে এমন অবশ অনুভূতি হয়ে থাকে। তবে কোন কারণ ছাড়া সুঁই ফোটানোর মতো অনুভূতি শরীরের কোন অংশে হলে বুঝতে হবে সেটা ভিটামিন-বি১২ এর ঘাটতির ফলেই দেখা দিচ্ছে। অনেকেই এই অনুভূতিকে ইলেক্ট্রিক শক এর মতো বলে ব্যাখ্যা করেন। এমন ধরণের অনুভূতি হয়ে থাকে নার্ভ এর ক্ষতির ফলে। যেটা হয়ে থাকে এই ভিটামিনের অভাবের ফলে।

নিস্প্রাণ ত্বক

ভিটামিন-বি১২ লোহিত রক্তকণা তৈরি করে থাকে। যে কারণে, শরীরে ভিটামিনে ঘাটতি দেখা দিলে ত্বক নিস্প্রাণ বা বিবর্ণ হয়ে যেতে থাকে। অনেকের গায়ের রং সাধারণের চাইতে অনেক বেশী সাদা হয়ে থাকে। কিন্তু তামাটে বর্ণের কারোর ত্বকের রং হুট করেই বিবর্ণ হয়ে গেলে বুঝতে হবে শারীরিক সমস্যা দেখা দিয়েছে।

ভুলোমনা হয়ে যাওয়া

এমন কী কখনো হয়েছে, কোন একটি কাজে এক ঘর থেকে অন্য ঘরে গিয়েছেন। ঘরে পৌঁছানোর পড়ে আর মনে পড়ছে না কী কাজের জন্য সেই ঘরে গিয়েছেন! অথবা কোন বন্ধুকে ফোন করবেন বলে মোবাইল হাতে নেবার পড়ে কোন কারণে ফোন করবেন সেটাই আর মনে পড়ছে না! এমন ঘটনা আমরা দেখি অহরহই। অতিরিক্ত কাজের চাপে অনেক সময় ছোটোখাটো ব্যাপার মনে থাকে না। কিন্তু, এমন ব্যাপার যদি নিয়মিত ঘটতে থাকে তবে সেটার ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। হুট করে কোন কিছু ভুলে যাওয়ার সমস্যাটি ভিটামিন-বি১২ এর ঘাটতির জন্যে দেখা দেয়।

অনেক বেশী ক্লান্ত বোধ করা

নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমানোর পরেও যদি সারাদিন ধরে ক্লান্তিভাব কাজ করে তবে বুঝতে হবে শরীরে কোন একটি সমস্যা দেখা দিয়েছে। পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রামের পরেও ক্লান্তিভাব দূর না হওয়া ভিটামিন-বি১২ এর ঘাটতি দেখা দেবার লক্ষণ। শরীরে রক্ত চলাচলের ক্ষেত্রে যত কম লোহিত রক্ত কণিকা থাকবে, যত কম অক্সিজেন পাওয়া যাবে। আর অক্সিজেনের ঘাটতি মানেই শরীরে অবসাদভাব ও ক্লান্তিভাব দেখা দেওয়া।

দূর্বলবোধ হওয়া

খুব সহজ কোন কাজকেও কি অনেক বেশী কষ্টকর বলে মনে হয়? কয়েকটি থালাবাসন ধোয়ার পর অথবা ঘর হালকা গোছানোর পর কি অনেক বেশী দূর্বল মনে হয়? অথবা মনে হতে থাকে অনেক বেশী শারীরিক পরিশ্রমের কাজ করা হয়ে গেছে? অনেক লম্বা সময় ধরে এমন দূর্বল বোধ হলে বুঝতে হবে শরীরে ভিটামিন-বি১২ এর ঘাটতি তৈরি হয়েছে।

দৃষ্টিশক্তিতে সমস্যা দেখা দেওয়া

প্রায়শ দৃষ্টিশক্তির বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেওয়ার লক্ষণ হলো শরীরে ভিটামিন-বি১২ এর অভাব তৈরি হয়েছে। ঘোলা দেখা, চোখের সামনে ঝিরিঝিরি দাগ দেখা, একটি বস্তুকে দুইটি হিসেবে দেখা দেওয়ার মতো সমস্যাগুলো দেখা দেওয়া শুরু করে। এমন ধরণের লক্ষণ দেখা দেওয়া শুরু করলে অপেক্ষা না করে দ্রুত ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া প্রয়োজন। কারণ, ভিটামিন-বি১২ এর অভাবে চোখের স্থায়ী ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।

উপরোক্ত যেকোন লক্ষণ প্রতিনিয়ত দেখা দেওয়া শুরু করলে বিলম্ব না করে নিকটস্থ ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। ভিটামিন-বি১২ এর অভাব দেখা দেওয়ার ফলে শরীরে স্থায়ীভাবে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে থাকে। তবে সঠিক সময়ে চিকিৎসা গ্রহণে তা সম্পূর্ণরূপে সারিয়ে তোলা সম্ভব।

জেনে নিন যে ৫ টি খাবার আপনার শরীরকে রাখবে বিষমুক্ত

খাবার খাওয়ার পর তা অন্ত্রে রাসায়নিক রূপান্তরের ফলে সৃষ্টি হয় কিছু উপাদান, যা দীর্ঘকাল ধরে শরীরে থাকার জন্য পরিণত হয় বিষাক্ত উপাদানে। তবে এটা দূর করাও সম্ভব।

শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকার জন্য শরীর বিষমুক্ত রাখা একান্ত প্রয়োজন। নিয়মিত সহজলভ্য কিছু খাবার গ্রহণের মাধ্যমে আমরা আমাদের শরীর থেকে এই বিষাক্ত উপাদানগুলো দূর করতে পারি।

তিতা খাবারঃ

তিতা খাবার আমাদের শরীর থেকে বিষাক্ত উপাদান বের করে দিতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখতে পারে। এ ক্ষেত্রে চিরতার পানি অথবা করলা কিংবা নিমপাতার রসের জুড়ি নেই।

তাজা ফলঃ

তাজা ফলে আছে ভিটামিন, খনিজ, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফাইবার ও কম ক্যালোরি যা শরীর থেকে বিষাক্ত উপাদানগুলো নির্মূলে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে চোখ ও ত্বককে উজ্বল করে এবং হজম শক্তি বাড়ায়।

গ্রীন টি:

শরীর থেকে বিষাক্ত জৈব রাসায়নিক নির্মূলে গ্রিন-টি’র কোনো বিকল্প নেই। তরল এই খাবার আমাদের শরীরের বিভিন্ন অংশের কর্মক্ষমতা বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এটি শুধু চা নয়, একে ওজন কমানোর ঔষুধও বলা চলে। এতে রয়েছে উচ্চমাত্রার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।

রসুনঃ

আমরা সবাই জানি হৃৎপিণ্ডের সুস্থতার জন্য সবচেয়ে উপকারী খাদ্য রসুন। এতে রয়েছে এলিসিন নামক রাসায়নিক উপদান যা রক্তে শ্বেত রক্তকণিকা উৎপাদন ও টক্সিন নির্মূলে সাহায্য করে। রস‍ুন কাচা খাওয়া সবচেয়ে উপকারী ।

লেবু:

লেবুতে আছে একগুচ্ছ ডিটক্স ডাইট যা টক্সিন নামক বিশেষ প্রকার জৈব, যা বিষ নির্মূলে সহায়তা করে। এছাড়া লেবুতে রয়েছে ভিটামিন সি, যা দাঁত ও ত্বকের জন্য বিশেষ উপকারী। তাছাড়া লেবুর ক্ষারীয় প্রভাব আপনার শরীরে অম্লতার ভারসাম্য ফিরিয়ে আনে। প্রতিদিন এক ফালি লেবুর সাথে গরম পানি আপনার শরীর থেকে বিষ নির্মূল করবে ।

মস্তিষ্কের কোষের ক্ষয় রোধ করে ব্যায়াম

প্রতিদিন ব্যায়ামের মাধ্যমে মস্তিষ্কের কোষের ক্ষয় রোধ করে এর বুড়িয়ে যাওয়া ঠেকানো সম্ভব বলে এক গবেষণায় উঠে এসেছে। গবেষণাগারের প্রাণীর উপর চালানো পরীক্ষায় এ তথ্য পেয়েছেন গবেষকরা।

জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা ইঁদুরের উপর পরীক্ষা চালিয়ে দেখেন, ব্যায়াম করলে স্নায়ুতন্ত্রে এসআইআরটি৩ এনজাইমের মাত্রা বেড়ে যায়। এই এনজাইম মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।

মূলত মানসিক চাপের কারণে মস্তিষ্কের কোষগুলোর শক্তি ক্ষয় হয়। পরীক্ষার জন্য গবেষকরা একটি চলমান চাকার মধ্যে ইঁদুরগুলোকে ছেড়ে দেন এবং সেগুলো সেখানে ক্রমাগত দৌড়াতে থাকে। এক পর্যায়ে দেখা যায় ইঁদুরগুলোর শরীরে এসআইআরটি৩ এনজাইমের মাত্রা বেড়ে গেছে।

প্রধান গবেষক মার্ক ম্যাটসন বলেন, “চলমান চাকায় দৌড়ানোর ফলে ইঁদুরের স্নায়ুতন্ত্রে এসআইআরটি৩ এনজাইমের মাত্রা বেড়ে যায়, যা তাদের মস্তিষ্কের কোষের ক্ষয় রোধ করতে সাহায্য করে।”

যখন আমাদের বয়স বাড়তে থাকে তখন মস্তিষ্কের কোষগুলো পুরোপুরি সচল থাকার জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি উৎপাদন বন্ধ করে দেয়। এর ফলে স্নায়ুতন্ত্রের দুর্বলতা জনিত রোগ যেমন: স্মৃতিভ্রংশের মতো রোগ হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়।

লিভারের সুস্থতা

আমাদের দেহের প্রধান অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলোর মধ্যে লিভার অন্যতম। দেহের স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনায় লিভারের সুস্থতা অনেক জরুরী। সে হিসেবে আমাদের দেহের সুস্থতা অনেকাংশে নির্ভর করে

অনেকে জেনে বুঝে, আবার অনেকেই না জেনে কিছু বাজে কাজের মাধ্যমে দেহের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই অঙ্গটি নষ্ট করে ফেলছেন ধীরে ধীরে।
লিভার নষ্ট হবার প্রধান ১০ কারণ:

-রাতে খুব দেরিতে ঘুমাতে যাওয়া ও সকালে দেরি করে ঘুম থেকে ওঠা।
-সকালে মূত্রত্যাগ ও পর্যাপ্ত পানি পান না করা।
-অতিরিক্ত খাবার খাওয়া।
-সকালে নাস্তা না করা।
-মাত্রাতিরিক্ত ওষুধ সেবন করা।
-প্রিজারভেটিভ, ফুড কালার ও খাবার মিষ্টি করতে কৃত্রিম সুইটেনার ব্যবহার করা খাবার বেশি খাওয়া।
-রান্নায় অস্বাস্থ্যকর তেল ব্যবহার করা।
-ভাজা-পোড়া জাতীয় খাবার বেশী খাওয়া ও ভাজার সময় অতিরিক্ত তেল ব্যবহার করা।
-মাত্রাতিরিক্ত যে কোন কিছুই ক্ষতিকর। খুব বেশি পরিমাণে কাঁচা খাদ্য খাওয়ার অভ্যাসও লিভারের ওপর চাপ সৃষ্টি করে।
লিভারের উপরেই।কিন্তু আমাদেরই কিছু বাজে অভ্যাসের কারণে প্রতিনিয়ত মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে লিভার। এরই ফলাফল হিসেবে লিভার ড্যামেজের মতো মারাত্মক সমস্যায় ভুগতে দেখা যায় অনেককেই।

চোখকে সুস্থ রাখতে পারেন

আমরা বাহু, পা, পেট এমনকি পিঠের ব্যায়াম করি। কিন্তু আমরা কি কখনো ভেবেছি চোখের ব্যায়ামের কথা? চোখ আমাদের সব সময়ের সঙ্গী। চোখকে ভাল রাখতে সহজ কিছু ব্যায়াম করুন প্রতিদিন। এতে আপনার দৃষ্টিশক্তি যেমন বাড়বে তেমন চোখের ক্লান্তি কমবে।

১।

আপনি যদি রোজ পর্যাপ্ত ঘুমান তাহলেই আপনার চোখ অনেক ভাল থাকবে। কারণ চোখ যথেষ্ট সময় আরাম পাবে। চোখকে আরাম দিতে আঙ্গুলের সাহায্যে করুন এই ব্যায়ামটি-

– চোখ বন্ধ করুন
– চোখের পাতার উপর এক জোড়া করে আঙ্গুল রাখুন
– ২ সেকেন্ডের জন্য হালকা চাপ দিন
– এভাবে ৫ থেকে ১০ বার করুন

– ব্যায়াম শেষে ধীরে চোখ খুলুন যাতে আপনার চোখ বাইরের আলোর সাথে সহজে খাপ খাইয়ে নিতে পারে।

২। চোখ ঘোরান

রেগে গেলে নিশ্চই চোখ ঘুরিয়ে রাগ প্রকাশ করেন আপনি? এবার সেটা করুন চোখের যত্নে-

– বাম দিক থেকে চোখের মণি রাউন্ড করে ঘুরে আবার বামে আনুন
– এভাবে ৫ থেকে ১০ বার করুন
– এবার বিপরীত দিকে অর্থাৎ ডান দিকে ঘোরান
– এভাবে ৫ থেকে ১০ বার করুন

৩। পাশে তাকান

আমরা আমাদের ডান দিকে বা বাম দিকে তো হরহামেশাই তাকাই। কিন্তু সেজন্য আমরা মাথাও ঘোরাই। মাথা না নাড়িয়ে করুন এই ব্যায়ামটি-
– এই ব্যায়ামটির জন্য প্রথমে সোজা হয়ে বসুন বা দাঁড়ান
– যতদূর সম্ভব দেখার চেষ্টা করুন (চোখের ওপর প্রেশার না দিয়ে)
– এভাবে ৫ থেকে ১০ সেকেন্ড দৃষ্টি অনড় রাখুন
– এবার মাথা না নাড়িয়ে বামে তাকান, সর্বোচ্চ যতটা বামে তাকানো সম্ভব
– অপেক্ষা করুন ৫ থেকে ১০ সেকেন্ড
– একইভাবে ডানে তাকান
– আবার ৫ থেকে ১০ সেকেন্ড অপেক্ষা করুন।
– অন্তত ১০ বার করুন ব্যায়ামটি।

প্রতিদিন এই সহজ ৩টি ব্যায়াম আপনার চোখের স্ট্রেস দূর করবে চমৎকার ভাবে। সারাক্ষণ ইলেকট্রনিক্স পণ্যের দিয়ে তাকিয়ে থাকার কারণে আমাদের চোখে অনেক প্রেসার পড়ে। তাই এই ব্যায়ামগুলো করা খুব জরুরী। আর অন্তত ১ ঘন্টা পর পর আপনার কম্পিউটার বা স্মার্টফোন চোখের সামনে থেকে সরিয়ে চোখ বন্ধ করে রাখুন।

কমপক্ষে ১ মিনিট করুন এটি। চোখের একটি স্বাভাবিক পলক ফেলার নিয়ম রয়েছে। ইলেকট্রনিক্স পণ্যের দিকে সর্বোক্ষণ তাকিয়ে থাকা চোখ ভুল যায় পলক ফেলতে। তাই মিনিট খানেক চোখ বন্ধ করে বিশ্রাম দিন তাকে। আপনিও ভাল থাকুন, ভাল রাখুন আপনার সুন্দর চোখ দু’টিকে।
চোখকে সুস্থ রাখতে পারেন চোখ বন্ধ করে

মেদ ভুঁড়ি কিংবা একটু বাড়তি ওজন কমানো

মেদ ভুঁড়ি কিংবা একটু বাড়তি ওজন কমানোর জন্য বেশিরভাগ মানুষ সবসময়ই বেশ চিন্তিত থাকেন। কী করলে ওজন কমবে, কী না খেলে ওজন কমবে, কোন খাবার ওজন কমায়, ডায়েট করতে চাইলে কীভাবে করতে হবে এসব ভেবে ঘন্টার পর ঘণ্টা পার হয়ে যায়। অনেকেই আছেন যারা ওজন কমাবার জন্য রাতের খাবার খান না। কিন্তু আপনি জানেন কি?

ওজন কমানোর জন্য রাতের বেলার খাবারের গুরুত্ব কতোটা? রাতের বেলা না খেলে দীর্ঘ ৮-১০ ঘণ্টা না খেয়ে থাকতে হবে। তাই রাতের বেলা খাওয়া বাদ দিয়ে ডায়েট করা মোটেও ভালো নয়। তাই রাতের বেলার ৩টি কার্যকর ডায়েট প্ল্যানে দ্রুত ওজন কমান।

# ডায়েট প্ল্যান ১- যারা ভাত জাতীয় খাবার পছন্দ করেন

অনেকেই আছেন যারা ভাবেন ভাত খেয়ে ওজন কমানো যায় না। কথাটি সম্পূর্ণ ভুল। পরিমিত পরিমাণ ভাত ওজন কমাতে বেশ সহায়ক। নিয়ম করে রাতের বেলা এই চার্টটি অনুসরণ করেই দেখুন ওজন কমে যাবে!

# ভাতের পরিমাণ ১ কাপ হতে হবে। কোনো ভাবেই এর চাইতে বেশি নয়।
# ১ টুকরো মাছ/ মাংস। মাঝারি আকৃতির এক টুকরো মাছ/ মাংস শরীরের আমিষের চাহিদা পূরণ করবে।

# ১ কাপ সবজি। কম তেলে বা তেলবিহীন সবজি ভাজি ফ্যাট অনেকাংশে কমায়। ১ কাপ পরিমাণ সবজি অবশ্যই ডায়েট চার্টে রাখবেন। সব চাইতে ভালো হয় কাঁচা সবজির সালাদ রাখলে।

# ১ কাপ ডাল। ডাল ফ্যাট কাটাতে সহায়তা করে। পাশাপাশি পুষ্টি যোগায় শরীরে।

# ১ টি ফল ও দই। খাবার শেষে ১ টি কলা, ১ টি আপেল কিংবা ১ টি কমলা খাবেন। এই ফলগুলো ফ্যাট কমাতে সাহায্য করে। আর ১/৪ কাপ টক দই। এটা খাবার হজমে সাহায্য করবে।

# ডায়েট প্ল্যান-২- যারা রুটি জাতীয় খাবার পছন্দ করেন। তাদের জন্য এই ডায়েট চার্ট। অনুসরন করে দেখুন, ওজন কমবে দ্রুত।

# ২/৩ টি পাতলা আটার রুটি। রুটিটি অবশ্যই আটার হতে হবে। লাল আটা হলে ভালো হয়। ময়দা ও পাউরুটি হলে চলবে না। কারণ ময়দার রুটি ও পাউরুটি খেলে ওজন বাড়ে।

# কম তেলে বা তেল বিহীন ১/২ কাপ সবজি আটার রুটির সঙ্গে খেতে পারেন।

# ডিম প্রোটিনের খুব ভালো একটি উৎস। ডিমের সাদা অংশে ক্যালোরি অনেক কম থাকে। তাই ১টি ডিমের সাদা অংশ খেতে পারেন। কিংবা এক টুকরো মাছ বা মাংস যা আপনার পছন্দ।

# কলা, আপেল কিংবা কমলা এই তিনটি ফলের যেকোনো ১টি খাবেন। দই খেতে চাইলে ২/৩ টেবিল চামচ খেতে পারেন।

# ডায়েট প্ল্যান-৩- এই ডায়েট প্ল্যানটি যে কেউ অনুসরণ করতে পারেন খুব দ্রুত ওজন কমাতে চাইলে। দ্রুত ওজন কমাতে খুবই কার্যকরী একটি চার্ট।

# আধা কাপ হাই ফাইবার কর্ণফ্লেক্সঃ হাই ফাইবার কর্ণফ্লেক্স ওজন কমাতে সাহায্য করে। তবে কর্ণফ্লেক্স অবশ্যই চিনি ছাড়া হতে হবে। যদি চিনি ছাড়া খেতে না পারেন তবে মধু ব্যবহার করতে পারেন।

# মাখন ছাড়া দুধে ক্যালোরির পরিমাণ অনেক কম থাকে। তাই ডায়েট চার্টে ১ কাপ মাখন ছাড়া দুধ অবশ্যই রাখবেন।

# এই ডায়েট চার্টে ফলের গুরুত্ব অনেক বেশি। বেশি করে ফল খাবেন রাতে। বিশেষ করে কলা ও সবুজ আপেল। এরা ফ্যাট কমাতে অনেক সহায়তা করে।

কর্ণফ্লেক্স, দুধ ও ফল একসঙ্গে মিশিয়ে খেয়ে নিন। দুধটা ঠাণ্ডা না খেয়ে গরম খাবেন। সঙ্গে খেতে পারেন এক মুঠো কাঠ বাদাম।

রাতের বেলা খাবার না খেয়ে থাকলে লাভের থেকে ক্ষতির পরিমাণই বেশি। ওজন তো কমবেই না বরং স্বাস্থ্যহানি ঘটবে। তাই রাতে বেলা না খেয়ে থাকার চেয়ে একটি ডায়েট চার্ট অনুসরণ করুন। দ্রুত ওজন কমাতে পারবেন।

মঙ্গলবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮

লেবুর খোসার যত উপকারিতা

লেবুর খোসায় রয়েছে ক্যালসিয়াম, ভিটামিন সি, পেকটিন, ফাইবার এবং মিনারেলস। লেবুর রসের এসব উপাদান শরীরের নিরাময় এবং আরোগ্যে কাজ করে। লাইফস্টাইল ওয়েবসাইট বোল্ড স্কাই জানিয়েছে এ বিষয়ে কিছু পরামর্শ
হার্টের জন্য
লেবুর খোসা খাওয়া হার্টের জন্য ভালো। লেবুর খোসা বাজে কোলেস্টেরলের মাত্রাকে কমায়। এর মধ্যে পটাশিয়াম থাকার কারণে রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতেও সাহায্য করে।
রোগ প্রতিরোধক্ষমতা
লেবুর খোসায় থাকা ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়। ঠান্ডা, ফ্লু এবং গলার ইনফেকশন দূর করতে সাহায্য করে।
কোষ্ঠকাঠিন্য রোধে
লেবুর খোসার মধ্যে উপস্থিত ফাইবার বা আঁশ অন্ত্রকে পরিষ্কার রাখে এবং বাউয়েল মুভমেন্ট ভালো করে। এটি হজমে সাহায্য করে এবং পেট ফোলাভাব রোধেও সহায়তা করে।
ওজন কমায়
লেবুর খোসা ওজন কমাতে সাহায্য করে। এর মধ্যে যে পেকটিন রয়েছে তা অন্ত্রের শর্করা শোষণ করতে সাহায্য করে এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে।   
ডায়াবেটিস প্রতিরোধে
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্যও লেবুর খোসা বেশ ভালো। এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং বিপাকে সাহায্য করে।
হাড়ের স্বাস্থ্য
আশ্চর্য হলেও সত্যি লেবুর খোসায় রয়েছে ক্যালসিয়াম। এটি হাড়ের স্বাস্থ্যকে ভালো রাখে।
গেরোর ব্যথা
শরীরের দৈনিক ভিটামিন সি-এর চাহিদার ৩০ শতাংশ লেবু পূরণ করতে পারে। ভিটামিন সি-এর আছে নিরাময় ক্ষমতা। এটি প্রোটিনের বাঁধনে সাহায্য করে, যা টেনডনস, লিগামেন্ট এবং ত্বকের জন্য ভালো। তাই লেবু এবং লেবুর খোসা খেতে পারেন। 
স্বাস্থ্যকর ত্বক
লেবুর খোসা কালো দাগ, বলি রেখা, বার্ধক্যের ছাপ দূর করতে সাহায্য করে। ত্বক ভালো রাখতে এটা খেতেও পারেন এবং সরাসরি ত্বকে লাগাতেও পারেন।

সকালে লেবুপানি খাওয়ার ১৪ সুফল

পিপাসা মেটাতে লেবুপানি খুব চমৎকার একটি পানীয়। এতে রয়েছে প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং মিনারেল, যা শরীরকে আর্দ্র রাখে। একে শক্তিবর্ধক এবং বিপাকক্ষমতা বাড়ানোর অন্যতম খাদ্য হিসেবে ধরা হয়। যখন আমরা সকালে ঘুম থেকে উঠি, আমাদের শরীর পানিশূন্য থাকে, যা পূর্ণ করার প্রয়োজন পড়ে। এই ঘরে তৈরি পানীয় শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ দূর করে, কিডনি ভালো রাখে এবং হজমে সাহায্য করে। স্বাস্থ্য বিষয়ক ওয়েবসাইট হেলদি ফুড টিম জানিয়েছে লেবুপানি পানের ১৪ সুফলের কথা।
কেন পান করবেন
১. লেবুতে রয়েছে ইলেকট্রোলাইট। যেমন : ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম ও ক্যালসিয়াম; যা শরীরে পানি ধরে রাখে।
২. এটি গিঁট ব্যথা রোধে অন্যতম খাবার।
৩. এর মধ্যে রয়েছে সাইট্রিক এসিড, যা হজমে সাহায্য করে।
৪. এর মধ্যে অন্যান্য খাবারের চেয়ে বেশি পরিমাণ এনজাইম রয়েছে।
৫. লেবুপানি লিভারকে পরিষ্কার রাখে এবং বিষাক্ত টক্সিন বের করতে সাহায্য করে।
৬. এই পানীয় লড়াই করে সংক্রমণ, প্রদাহ, শ্বাসযন্ত্রের সমস্যার বিরুদ্ধে।
৭. এটি পেট পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে।
৮. পানি স্নায়ুর কার্যক্রমকে ভালো রাখে। বিষণ্ণতা দূর করে, পটাশিয়ামের মাত্রা বাড়ায় এবং উদ্বেগ দূর করতে সাহায্য করে।
৯. এটি রক্তের শর্করার ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
১০. এটি অ্যালকালইজিং প্রভাব তৈরি করে, পিএইচের মাত্রা ঠিক রাখে এবং বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
১১. এই পানীয় ত্বকের জন্য ভালো। কেননা এতে রয়েছে ভিটামিন। এটি ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে সহায়ক।
১২. লেবুপানি সন্তানসম্ভবা নারীর ভিটামিনের ভালো উৎস। এটি ঠান্ডা এবং ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করে।
১৩. লেবুপানি ইউরিক এসিডকে বিস্মৃত করে, যে কোনো ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে।
১৪. যদি আপনার বুক জ্বালাপোড়া করে, তবে এক চা-চামচ লেবুর রস, এক গ্লাস পানির সঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারেন। সমস্যা দূর হবে।
সঠিক উপায়ে পানের নিয়ম
প্রথমে চিনি ছাড়া এক গ্লাস গরম পানিতে একটি লেবুর রস মেশান। লেবুর রস বের করার জন্য জুসারও ব্যবহার করতে পারেন। এ থেকে লেবুর কিছু তেলও বের হবে যা কাজে লাগবে।
অবশ্যই ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে পান করবেন। সকালের নাশতার এক ঘণ্টা আগে খাওয়া ভালো। দীর্ঘমেয়াদি উপকারিতা পেতে নিয়মিত লেবু পান করতে পারেন। তবে যাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা আছে তারা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে এ পানীয় পান করবেন।

সাতদিন খালি পেটে রসুন-মধু

কেবল খাবার হিসেবে নয়, বহুকাল আগে থেকে রসুন ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। বিশ্বের প্রায় প্রতিটি জাতিই রসুনকে বিভিন্ন অসুখ থেকে নিরাময়ের জন্য ব্যবহার করে আসছে।

প্রাচীন গ্রিকরা তাদের দৈনন্দিন জীবনের অনেক ক্ষেত্রেই রসুনের ব্যবহার করত। এ ছাড়া অলিম্পিক গেমের ক্রীড়াবিদরা প্রতিযোগিতায় ভালো করার জন্য রসুন খেতেন। প্রাচীন চীন ও জাপানে রসুনকে উচ্চ রক্তচাপ কমানোর ঘরোয়া উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা হতো। ভারতে হৃদরোগ ও গাঁটে ব্যথা প্রতিরোধে দীর্ঘকাল ধরেই রসুন ব্যবহার হয়ে আসছে।

আবার বিভিন্ন দেশে রোগ নিরাময়কারী উপাদান হিসেবে মধু ব্যবহৃত হয়ে আসছে। বিশ শতকের মাঝামাঝি এসে একে অ্যান্টিবায়োটিকের সঙ্গে তুলনা করা হয়। মধুকে সংক্রমণ প্রতিরোধী উপাদান হিসেবে ধরা হয়। এই দুটো চমৎকার জিনিস যখন একসঙ্গে হয়, তখন এর গুণ বেড়ে যায় আরো বেশি।

রসুন ও মধুর মিশ্রণ বিভিন্ন ধরনের  সংক্রমণ, ঠান্ডা, জ্বর, কফ ইত্যাদি সারাতে বেশ ভালো কাজ করে। এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। কেবল সাতদিন রসুন ও মধুর মিশ্রণ খেলে বিভিন্ন সংক্রমণ থেকে শরীরকে অনেকটাই রক্ষা করা যায়।

জীবনধারা বিষয়ক ওয়েবসাইট রাইস আর্থ জানিয়েছে মধু ও রসুনের এই মিশ্রণটি তৈরির প্রণালি।

উপাদান

একটি মাঝারি আকৃতির বয়াম, মধু, তিন থেকে চারটি রসুন। (খোসা ছাড়িয়ে কোয়াগুলো বের করুন।)

প্রণালি

প্রথমে বয়ামের মধ্যে রসুনের কোয়াগুলো নিন। এরপর এর মধ্যে মধু ঢালুন। বয়ামের মুখ বন্ধ করে মিশ্রণটি ফ্রিজের মধ্যে সংরক্ষণ করুন।

প্রতিদিন খালি পেটে মিশ্রণটি আধা চা চামচ করে খান। ঠান্ডাজনিত সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য দিনে ছয়বার আধা চা চামচ করে এটি খেতে পারেন। এটি সংক্রমণ দূর করতে কাজ করবে।

প্রতিদিন তিনটি খেজুর খেলে কী হয়

আপনি কি জানেন, খেজুরের মধ্যে আঁশ রয়েছে? আঁশ হজম ভালো করতে সাহায্য করে। তাই খেজুর খেলে হজম ভালো হয়।
এ ছাড়া খেজুর পুষ্টিগুণে ভরপুর একটি খাবার। রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধে খেজুর খুব উপকারী। এটি রক্তচাপ ঠিকঠাক রাখতে সাহায্য করে।
খেঁজুরের মধ্যে থাকা প্রাকৃতিক সুগারের জন্য এটি খেতে খুব সুস্বাদু। দিনে কেবল তিনটি খেজুর খাওয়া ভিটামিনের চাহিদা অনেকটাই পূরণে কাজ করে। প্রতিদিন তিনটি খেজুর খাওয়ার আরো কিছু উপকারিতার কথা জানিয়েছে জীবনধারা বিষয়ক ওয়েবসাইট বোল্ডস্কাই।
আয়রনের চমৎকার উৎস
যারা রক্তস্বল্পতায় ভুগছেন, তাদের খাদ্যতালিকায় খেজুর রাখা প্রয়োজন। ১০০ গ্রাম খেজুরে ০.০৯ গ্রাম আয়রন থাকে। এটি শরীরের প্রতিদিনের আয়রনের চাহিদার ১১ ভাগ পূরণ করে। আয়রন রক্তস্বল্পতার সমস্যা কমাতে সাহায্য করে।
চোখ ভালো রাখতে
খেজুরের মধ্যে রয়েছে জিক্সাথিন ও লিউটেইন। এগুলো ম্যাকুলার ও রেটিনার স্বাস্থ্যকে ভালো রাখতে ভূমিকা রাখে।
কোষ্ঠকাঠিন্য
আপনি কি কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভুগছেন? ঘুমানোর আগে কিছু খেজুর খান। এরপর এক গ্লাস পানি পান করুন। এতে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা অনেকটাই কমবে।
ওজনের ভারসাম্য রাখে
খেজুর অনেক পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ। এটি খেলে চিনি খাওয়ার ইচ্ছাও পূরণ হয়। তবে ওজন বাড়ে না।
হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্যকে ভালো রাখে
নিয়মিত খেজুর খাওয়া হার্টের সমস্যা কমাতে উপকারী। এক গ্লাস পানির মধ্যে বিচি ফেলে কয়েকটি খেজুর রাখুন। পরের দিন সকালে খেজুরসহ এই পানি ব্ল্যান্ড করুন। দিনে কয়েকবার এই পানি খেতে পারেন। এটি হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধে কাজ করে।  
উচ্চ রক্তচাপ কমাতে
খেঁজুরের মধ্যে রয়েছে কম পরিমাণ সোডিয়াম। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে খেঁজুর উপকারী।
স্ট্রোক প্রতিরোধ করে এবং মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো রাখে
খেঁজুরের মধ্যে থাকে উচ্চ পরিমাণ পটাশিয়াম। এটি মস্তিষ্কের স্নায়বিক কার্যক্রম ভালো রাখে। উচ্চ পরিমাণ পটাশিয়াম স্ট্রোকের আশঙ্কা প্রতিরোধ করে।
এ ছাড়া খেঁজুরের মধ্যে রয়েছে ফসফরাস। এটি মস্তিষ্কের জন্য ভালো। এসব উপকারগুলো পেতে খাদ্যতালিকায় প্রতিদিন অন্তত তিনটি খেজুর রাখুন। তবে যেকোনো খাবার খাওয়ার আগে অবশ্যই শরীরের অবস্থা বুঝে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নিন।

ক্লান্ত থাকলে যে তিন কাজ করবেন না

আপনার কি প্রায়ই ক্লান্ত লাগে? অনেকেই এ সমস্যায় ভোগেন। তবে জানেন কি, ক্লান্ত থাকলে কিছু কাজ করা থেকে বিরত থাকা ভালো? না হলে ক্লান্তি আরো বেড়ে যাবে।

ক্লান্ত থাকলে করা ঠিক নয়, এমন কিছু কাজের কথা জানিয়েছে জীবনধারাবিষয়ক ওয়েবসাইট বোল্ডস্কাই।   

১. খুব বেশি কফি পান করবেন না
খুব বেশি কফি পান আপনাকে ক্লান্ত করে দেবে। এটি শরীরের শক্তি কমিয়ে দেয়। কফি খাওয়ার পর এটি পাঁচ ঘণ্টা পাকস্থলীতে থাকে। তাই এ সময়ের ভেতর কফি আবার খেলে শরীরে বাজে প্রভাব পড়ে। বিশেষ করে ঘুমের ক্ষতি হয়।

২. জাঙ্কফুড খাবেন না
শরীর ক্লান্ত থাকলে উচ্চমাত্রার চর্বিজাতীয় খাবার থেকে দূরে থাকুন। এগুলো অস্বাস্থ্যকর খাবার। এ ধরনের খাবার ওজন বাড়িয়ে তুলবে। এর বদলে সবজি, মুরগির মাংস, বাদামি ভাত খান। এগুলো আপনাকে কর্মক্ষম রাখতে কাজ করবে।

৩. মাঝরাতে স্ন্যাকস খাবেন না
ক্লান্ত থাকলে মাঝরাতে উঠে কোনো স্ন্যাকস খাবেন না। এ সময় খাবার হজমে সমস্যা হয়। হ্যামবার্গার, চিপস ইত্যাদি বুক জ্বালাপোড়া তৈরি করে। এতে ঘুমের অসুবিধা হয়। ঘুম না হলে আরো ক্লান্ত হয়ে পড়বেন।

ত্বকের ক্ষতি করে যে তিন অভ্যাস

সুন্দর ত্বক সবারই ভালো লাগে। তবে আমরা না জেনে অনেক সময় এমন কাজ করি, যেগুলো ত্বকের ক্ষতি করে।
ত্বকের ক্ষতি করে এমন কিছু বিষয়ের কথা জানিয়েছে জীবনধারা বিষয়ক ওয়েবসাইট বোল্ডস্কাই। 

১. মেকআপ না তুলে ঘুমিয়ে পড়া
সৌন্দর্য বাড়াতে আমরা মেকআপ ব্যবহার করি। তবে মেকআপ ত্বকের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে, যদি সেটা না পরিষ্কার করেই ঘুমিয়ে পড়ি। মেকআপ না পরিষ্কার করে ঘুমিয়ে পড়া ব্রণের মতো বাজে সমস্যা তৈরি করতে পারে। তাই বাইরে থেকে ঘরে ফিরে অবশ্যই মুখ পরিষ্কার করুন।

২. খুব গরম পানিতে গোসল
খুব বেশি গরম পানিতে গোসল না করার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। এতে ত্বকের পোরগুলো খুলে যায়; ত্বক বেশি শুষ্ক হয়ে পড়ে।

৩. ময়লা বালিশের কভার
জানেন কি ময়লা বালিশের কভারও ত্বকের ক্ষতি করে? ময়লা কভার ত্বকের সংস্পর্শে এসে ইরিটেশন তৈরি করে। প্রতি সপ্তাহে অন্তত একবার বালিশের কভার বদলানো উচিত। এটিও ত্বক ভালো রাখার ছোট একটি উপায়।

শনিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮

খুশকি দূর করার ৯টি কার্যকর হার্বাল সমাধান

খুশকি আপনার মাথার চুলের তো ক্ষতি করছেই, তার ওপরে এটা আবার মুখে ব্রণও সৃষ্টি করতে পারে। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব খুশকি দূর করাই বাঞ্ছনীয়।
এন্টি ড্যানড্রাফ শ্যাম্পু ব্যবহারে খুশকি দূর হতে পারে। তবে আমরা প্রাকৃতিক কিছু টিপস দেখানোর চেষ্টা করবো। যা অনুসরণ করলে আপনি কোনো ধরনের পাশ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই খুশকি থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
এক. ৩-৪ টুকরা লেবু নিন এবং ৪-৫ কাপ পানির মধ্যে দিয়ে ১৫-২০ মিনিট ধরে সিদ্ধ করুন। এরপর এটি ঠাণ্ডা হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। এবার আপনার মাথার চুল ধোয়ার সময় এটি ব্যবহার করুন। কমপক্ষে ১ সপ্তাহ এটি ব্যবহার করবেন।
দুই. ২ টেবিল চামচ মেথি সারারাত ধরে পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। এরপর সকালে তা দিয়ে সুন্দর করে পেস্টের মত বানিয়ে ফেলুন। এই পেস্ট আপনার চুলে এবং মাথার তালুতে ব্যবহার করুন কমপক্ষে ৩০ মিনিট। এরপর ধুয়ে ফেলুন। ভাল ফলাফলের জন্য অন্তত ৪ সপ্তাহ ব্যবহার করুন।
তিন. গোসলে যাওয়ার আগে লেবুর রস দিয়ে আপনার মাথার তালুতে ম্যাসাজ করুন। ১৫-২০ মিনিট পর মাথা ধুয়ে ফেলুন।
চার. সমপরিমান পানি এবং ভিনেগার দিয়ে মিক্সার তৈরি করুন। রাতে মিক্সারটি মাথার তালুতে লাগিয়ে ঘুমিয়ে পড়ুন। সকালে উঠে বেবি শ্যাম্পু দিয়ে হালকাভাবে চুল ধুয়ে ফেলুন।
পাঁচ. সামান্য পরিমাণ দধী চুলে এবং মাথার তালুতে লাগিয়ে রাখুন। এটা ১ ঘণ্টা রেখে দিন। এরপর হালকাভাবে বেবি শ্যাম্পু ব্যবহার করে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে অন্তত দুইবার এই পদ্ধতি অবলম্বন করুন।
ছয়. দু’টো ডিম ভাঙুন এবং এটি পেস্ট আকারে মাথার তালুতে লাগান। এক ঘণ্টা পর ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন। এই পদ্ধতি খুশকি দূর করতে এবং চুল পড়া কমাতে সাহায্য করে।
সাত. হালকা উষ্ণ বাদাম তেল, নারিকেল তেল অথবা অলিভ ওয়েল মাথার তালুতে ম্যাসাজ করতে পারেন। এতে খুশকি দূর হয়।
আট. ১ টেবিল চামচ লেবুর রস এবং ৫ টেবিল চামচ নারিকেল তেল একসাথে মেশান। এবার এই মিক্সার মাথার তালুতে ব্যবহার করুন। ২০-৩০ মিনিট পর ভাল শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
নয়. নিমপাতা পিষে পেস্ট বানিয়ে ফেলুন। এবার মাথার শুষ্ক খুলিতে এই পেস্ট সরাসরি প্রয়োগ করুন। আধাঘণ্টা পর ধুয়ে ফেলুন।
চুল সবসময় পরিষ্কার রাখুন। অপরিষ্কার চুলে খুশকি হবে এবং বৃদ্ধি পাবে এর কোনো বিকল্প নেই। কাজেই প্রতিদিনই আপনার চুল পরিষ্কার করে ধুয়ে ফেলবেন। ধীরে ধীরে আপনার চুল থেকে হারিয়ে যাবে খুশকি।

বুধবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮

হেল্থ টিপস

হেল্থ টিপস  ১ঃ যারা নিয়মিত সকালের নাশতায় ডিম খাওয়ার অভ্যাস করেছেন তাদের স্মৃতিশক্তি অন্যদের চেয়ে অনেক তুখোড়।
হেল্থ টিপস ২ঃ কলা খেয়ে সোজা হয়ে কিছু সময় বসে থাকলে মাথাব্যথা কমে।
হেল্থ টিপস ৩ঃ আপেলের চেয়ে আমড়ার পুষ্টিগুণ বেশি।
হেল্থ টিপস ৪ঃ  প্রতিদিন একটি পাকা টমেটো খেলে শরীরেররক্তকনিকা বাড়ে, ফলে ত্বক পরিস্কার হয়।
হেল্থ টিপস ৫ঃ ঠাণ্ডা লেগে মাথাব্যথা হলে চামচ পেঁয়াজের রসের সঙ্গে দ্বিগুণ পানি মিশিয়ে একবার খেলে ব্যথা কমে যাবে।
 Health Tips All ৬ঃ ডালিম গাছের বাকল, পাতা, অপরিপক্ক ফল এবং ফলের খোসার রস পাতলা পায়খানা, আমাশয় ও রক্তক্ষরণ বন্ধ করে।
হেল্থ টিপস ৭ঃ সকালে সূর্যোদয়ের আগে ঘুম থেকে উঠা উচিত।মুখ ধুয়েই এক থেকে দুই গ্লাস পানি খা‌ওয়া ভাল।এতে সহজে কোন পেটের রোগ হয় না।
হেল্থ টিপস ৮ঃ  পানি খাবার পর কিছুক্ষন খোলা জায়গায় হাটা উচিত।সকালের বিশুদ্ধ বাতাস শরীরের জন্য বিশেষ উপকারী।

 Health Tips All ৯ঃ খালি পেটে চা বা কফি খাওয়া ঠিক না ।খাবার আগে অবশ্যই কিছু খাওয়া প্রয়োজন।
হেল্থ টিপস ১০ঃ  খাবার যতদূর সম্ভব নিয়মিত খাওয়া উচিত।খিদে না পেলে কখনই খাওয়া উচিত নয়,আবার খু্ব বেশী বা খুব কম খাওয়াও উচিত নয়।
 Health Tips All ১১ঃ  সপ্তাহে বা ১৫ দিনে একদিন উপবাস করলে পাকস্থলির কর্মক্ষমতা ঠিক থাকে।আমাবশ্যা বা পূর্ণিমাতে উপবাস করলে স্বাস্থ্য ভাল থাকে।
হেল্থ টিপস ১২ঃ  খাবার সময় বেশি পানি খাওয়া ঠিক না।খাবার শেষ করার অন্তত ১ ঘন্টা পরে পানি খাওয়া উচিত তবে দিনে যত বেশি পানি পান করা যায় ততই ভাল।বেশি পানি পান করলে কোন ক্ষতি নেই।

 Health Tips  All ১৩ঃ  তাড়াতাড়ি বা অন্যমনস্ক হয়ে খাবার খাওয়া ঠিক না।খাবার সময় কথা বলা ঠিক না।
হেল্থ টিপস ১৪ঃ  দুপুরে খাবার সময় ১২ টা এবং রাতে খাবার সময় ৯ টার আগে হওয়া উচিত।কেননা বেশি রাতে খেলে খাবার ঠিকমত হজম হয় না,তাই রাতে হালকা খাওয়া উচিত।অধিক রাতে দুধ ছাড়া কিছু খাওয়া ঠিক না।
 Health Tips All ১৫ঃ  রাতে খাওয়ার অনন্ত আধ ঘন্টা থেকে এক ঘন্টা পরে ঘুমাতে যওয়া উচিত।
হেল্থ টিপস ১৬ঃ  অতিরিক্ত পরিশ্রমের পর বিশ্রাম না নিয়ে খাওয়া ঠিক নয়, তেমনি খাবার পর অবশ্যই কিছুক্ষন বিশ্রাম নেওয়া দরকার।
 Health Tips  All
১৭ঃ  রোদ থেকে এসে বা অতিরিক্ত পরিশ্রমের পর সঙ্গে সঙ্গে ঠান্ডা পানি খাওয়া ঠিক না।

বৃহস্পতিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮

পায়ের মাংসপেশিতে টান পড়লে করণীয়

মাংসপেশির তীব্র, ব্যথাপূর্ণ সংকোচন কিংবা শক্ত হয়ে যাওয়াকে মাংসপেশির টান বলে।  হঠাৎ করে শুরু হয়ে কয়েক সেকেন্ড থেকে কয়েক মিনিট স্থায়ী হয় এটি। অনেকের ক্ষেত্রে পায়ের পেশিতে এই সমস্যা হয়।

পায়ের  মাংসপেশিতে টান পড়লে করণীয় :

    আক্রান্ত পায়ের ওপর ভর দিয়ে হাঁটুন।
    আপনার হাত দিয়ে আক্রান্ত মাংসপেশিতে ম্যাসাজ করুন অথবা বরফ দিয়ে ম্যাসাজ করুন।
    পা সোজা করুন, পায়ের পাতাকে হাঁটুর দিকে টেনে আনুন। যতক্ষণ না আপনার পায়ের কাফ মাসলের পেশি প্রসারিত হয়।
    ব্যথা থাকলে গরম তোয়ালে বা গরম প্যাড ব্যবহার করুন কিংবা গরম স্যাঁক নিন।

পায়ের ডিম বা কাফ মাসেলে টান পড়লে

    টান পড়া পায়ের ওপর ভর দিয়ে দাঁড়ান এবং হাঁটু সামান্য বাঁকা করুন।
    আপনি দাঁড়াতে সক্ষম না হলে হাঁটু সামান্য বাঁকা করুন।
    দাঁড়াতে সক্ষম না হলে আক্রান্ত পা প্রসারিত করে মেঝেতে বা চেয়ারে বসুন।
    পায়ের আঙুলগুলোকে হাত দিয়ে ধীরে নিজের দিকে টানুন।
    আক্রান্ত মাংসপেশি ম্যাসাজ করুন।

লেখক : সহযোগী অধ্যাপক অর্থোপেডিক ও ট্রমা বিভাগ, ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ।

রবিবার, ৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮

জোড়া ব্যথা,নিরাময়

জোড়া ব্যথা,নিরাময়,
ইনজুরি ছাড়াও বিভিন্ন রোগে জোড়া আক্রান্ত হয়ে থাকে ইনজুরি রোগের বিভিন্ন উপসর্গের মধ্যে ব্যাথা অন্যতম জোড়া ব্যথা যে কারণেই হোক এর যথোপযুক্ত নিরাময় প্রয়োজন অন্যথায় জোড়ায় বিভিন্ন ধরনের জটিলতা দেখা দিতে পারে ইনজুরি রোগের কারণে জোড়ার বিভিন্ন স্তরে ক্ষতি হতে পারে সুতরাং ব্যথার কারণ দ্রুত অনুসন্ধান করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা গ্রহণ করলে জোড়াকে ভয়াবহ ক্ষতি হতে রক্ষা করা যায় জোড়াতে ফ্লুইড জমলে, অতিরিক্ত হাড় হলে, সাইনোভাইটিস, বার্সাইটিস হাড় টিস্যুর টিউমার হলে এবং জোড়া সুসংগঠিত না হলে জোড়ায় ব্যথা হয় ইনজুরির তীব্রতা প্রকারভেদ অনুযায়ী জোড়ায় সাথে সাথে বা চার থেকে ছয় ঘণ্টা পরে ব্যথা হতে পারে কিছু কিছু জোড়া (যেমন কাঁধ) আঘাতের কারণে তীব্র ব্যথাসহ জোড়ার আরবণ (ক্যাপসুল, ল্যাবরাম) পেশি ছিড়ে মারত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হয় ইনজুরির ফলে জোড়া ছুটে গেলে, ছুটে যাওয়ার উপক্রম হলে বা বার বার স্থানচ্যুতি হলে জোড়ায় ব্যথা হয় কিশোর বয়সে রিউমেটিক জ্বরে বড় জোড়ায় (গোড়ালি, হাঁটু) ব্যথা হয় পঁচিশ থেকে পঞ্চান্ন বৎসর বয়সে রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস থেকে সাধারণ ছোট জোড়া (হাত পায়ের আঙুল), এবং কিছু ক্ষেত্রে বড় জোড়া আক্রান্ত হয়ে ব্যথার উদ্রেক করে ছাড়া গাউটি (৭৫% ক্ষেত্রে পায়ের বুড়ো আঙুল), রিএকটিভ, সোরিয়াটিক (১০% থেকে ২৫% ক্ষেত্রে জোড়া আক্রান্ত হয়), স্পোনডোলাইটিক অসটিওআর্থ্রাইটিসের জন্য জোড়ায় ব্যথা হয়ে থাকে ধরনের আর্থ্রাইটিসে জোড়ায় সাধারণত ছয় সপ্তাহের বেশি ব্যথা থাকে অসটিওআর্থ্রাটিস বা গিটে বাত ওজন বহনকারী (হাঁটু, গোড়ালি হিপ) জোড়াকে আক্রান্ত করে ব্যাথার সৃষ্টি করে ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ফাঙ্গাস টিবি (যক্ষ্মা) জীবানু দ্বারা জোড়া সংক্রমণ হলে ব্যথা হয় বয়স্কদের ব্যবহার জনিত ক্ষয়ের ফলে ব্যথা ছাড়াও জোড়া আটকিয়ে যায় এবং জোড়ার দৃঢ় অবস্থা নষ্ট হয়
ব্যথা সম্পর্কে জানতে হবে :
* তীব্র বা কম ব্যথা
* এক বা অধিক জোড়ায় ব্যথা
* শুরুটা কি হঠাৎ বা আস্তে আস্তে?
* প্রথম ব্যথা?
* সব সময় থাকে বা মাঝে মাঝে ব্যথা এবং ভালো হয়ে যায়
* দিনে বা রাতে কখন ব্যথা বাড়ে এবং কমে
* কিসে ব্যথা বাড়ে এবং কমে?
জোড়া ব্যথার জটিলতা :
* জোড়া নড়াচড়া করা কষ্টকর
* জোড়া গরম লাল হতে পারে
* পেশী শুকিয়ে যায়
* লিগামেন্ট ঢিলা হয় এবং ছিড়ে যায়
* হাড় তরুণাস্থি ক্ষয় হয়
* আর্থ্রাইটিস হয়
* পেশি দুর্বলতা এবং লিগামেন্ট ঢিলা বা ছিড়ার জন্য জোড়া অস্থিতিশীল হয়
* জোড় জমে যায়
কখন চিকিৎসকের পরামর্শ প্রয়োজন ?
* জোড়ার ব্যথা সাত দিনের বেশি স্থায়ী হলে
* ব্যথা ছাড়াও জোড়া লাল এবং গরম হলে
* শরীরে জ্বর বা ঠান্ডা অনুভূতি হলে
* আর্থ্রাইটিস ব্যতীত অন্য কারণে জোড়ায় ব্যথা হলে
* যে কোন কারণে জোড়ায় ছিদ্র হলে
* ব্যথাসহ জোড়া অস্থিতিশীল হলে বা আটকিয়ে গেলে
* অল্প ব্যথাসহ জোড়া বারবার স্থানচ্যুতি হলে
নিরাময় :
চিকিৎসা নির্ভর করে জোড়া ব্যথার কারণসমূহ এবং এর তীব্রতার উপর সঠিক রোগ নির্ণয় করতে রোগের ইতিহাস শুনতে হবে, ভালভাবে শারীরিক পরীক্ষা করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় ল্যাবরেটরি পরীক্ষার সাহায্য নিহে হবে যেমন আর্থ্রাসিনটোসিস করে জয়েন্ট ফ্লুউড পরীক্ষা, রক্তের বিভিন্ন পরীক্ষা, জোড়ার এক্স-রে, বোন স্ক্যান, সিটি স্ক্যান এবং এম আর আই যে কোনো কারণেই ব্যথা হউক না কেন জোড়াকে বিশ্রামে রাখতে হবে স্পিন্ট বা জয়েন্ট সাপোর্ট দিয়ে জোড়াকে উঁচু করে রাখলে ব্যথা কম হবে জোড়ায় ইনজুরি হলে প্রতি ঘণ্টায় দশ থেকে পনের মিনিট করে বরফের বা ঠান্ডা পানির সেক দিলে ব্যথা কমে আসবে এভাবে ৪৯ ঘণ্টা থেকে ৭২ ঘণ্টা চলতে থাকবে আর্থ্রাইটিস জীবাণু সংক্রমণের ক্ষেত্রে কুসুম গরম পানির সেঁক (মোয়েস্ট হিট) খুবই উপকারী ব্যথা নিরাময়ের জন্য বেদনা নাশক জীবাণু সংক্রমনের জন্য এ্যন্টিবায়োটিক ওষুধ সেবন করতে হবে আর্থ্রাটিসে ব্যথার ওষুধ ছাড়াও রোগের প্রকৃতি পরিবর্তনের জন্য অতিরিক্ত ওষুধ সেব করতে হবে স্বল্পসময়ের জন্য স্টেরয়েড সেবন করলে দ্রুত ব্যথা কমে আসে আর্থ্রাটোসিস করে জয়েন্ট ফ্লুউড বের করে স্টেরয়েড এবং কখনও কখনও হায়ালুরোনিক এসিড ইনজেকশন জোড়ায় পুশ করলে উপসর্গ দ্রুত লাঘত হতে পারে জোড়ায় স্বাভাবিক নড়াচড়া পেশি শক্তিশালি হওয়ার ব্যায়াম চালিয়ে যেতে হবে কখনও কখনও ফিজিক্যাল থেরাপির (এস ডব্লিউ ডি ইউ এস টি) প্রয়োজন হয়
আর্থ্রাস্কোপিক চিকিৎসা :
মেডিকেল বা কনজারভেটিভ চিকিৎসায় ব্যথা না সারলে বা জটিলতা দেখা দিলে সার্জিক্যাল বা আর্থ্রোস্কোপিক চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে ছোট ছিদ্রের মাধ্যমে আর্থ্রোস্কোপ জোড়ায় প্রবেশ করিয়ে :
* জয়েন্ট বিসঙ্কোচন ওয়াশ আউট করা যায়
* অতিরিক্ত হাড় এবং বিচ্ছিন্ন হাড় তরুণাস্থি বের করা হয়
* সাইনোভেকটমি, মেনিসেকটমি সাইনোভিয়াল বায়োপসি করা হয়
* নতুন লিগামেন্ট তৈরি এবং মেনিকাস পেশি রিপেয়ার করা হয়
* জোড়ার আবরণ (ক্যাপসুল ল্যাবরাম) সেলাই করে জোড়া স্থানচ্যুতি রোধ করা যায়
আর্থ্রোস্কোপিক চিকিৎসার পর নিয়মিত পরিমিত পরিচর্যার (রিহেবিলিটেশন) মাধ্যমে জোড়ার স্বাভাবিক অবস্থা দ্রুত ফিরিয়ে আনতে হবে
ডা. জি এম জাহাঙ্গীর হোসেন
হাড় জোড়া বিশেষজ্ঞ এবং আর্থ্রাস্কোপিক সার্জন
ডিজিল্যাব মেডিকেল সার্ভিসেস, মিরপুর-১০, ঢাকা