সোমবার, ২৮ মে, ২০১৮

রোজা পালনের স্বাস্থ্যগত উপকারিতা

মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের জন্য রমজান মাস বেশ গুরুত্বপূর্ণ। সুষম খাদ্য গ্রহণের মধ্য দিয়ে সঠিকভাবে রোজা রাখলে এটি বেশ স্বাস্থ্যবান্ধব হয়।
রোজা পালনের স্বাস্থ্যগত গুরুত্ব
১। রোজা রাখলে রক্তের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে থাকে।
২। রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রণ হয়।
৩। রোজা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
৪। রোজা রাখলে শরীরের চর্বিতে সঞ্চিত বিসাক্ত পদার্থ ধ্বংস হয়।
৫। রোজা আমাদের অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে।
৬। ডিএনএ ডেমেজ প্রতিরোধ করে।
৭। অন্ত্রের ও খাদ্যনালীর বিভিন্ন সমস্যা নিরাময়ে সহায়তা করে।
সর্বোপরি মানসিক সুস্বাস্থ্যের জন্য রোজা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে অসুস্থ থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে রোজা রাখতে হবে। শিশু ও প্রবীণদের ক্ষেত্রে রোজা রাখার ক্ষেত্রে
লেখক : প্রধান পুষ্টিবিদ, ইউনাইটেড হাসপাতাল

শনিবার, ২৬ মে, ২০১৮

রোজায় পানিশূন্যতা রোধে করণীয়

রোজার সময় অনেকেই পানিশূন্যতার সমস্যায় ভোগেন। পানি শূন্যতার সমস্যা সমাধানে কিছু বিষয় মেনে চলা জরুরি।
১। ইফতার থেকে সেহরি পর্যন্ত বয়স, ওজন ও উচ্চতা ভেদে দৈনিক আট থেকে ১২ গ্লাস পানি পান করতে হবে।
২। পানি স্বল্পতা রোধে বিশেষ কিছু টিপস ব্যবহার করা যেতে পারে, যেমন-
# সেহরিতে অতিরিক্ত চা-কফি পান না করা। এগুলো পানির চাহিদাকে আরো বাড়িয়ে দেয়।
# অতিরিক্ত লবণাক্ত খাবার বর্জন করতে হবে। এটি পানি স্বল্পতা রোধে সহায়তা করবে।
# রি হাইড্রেট্রিং মিনারেল তথা পটাশিয়মযুক্ত খাবার সেহরি ও ইফতারে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।এটি পানি স্বল্পতা দূরীকরণে বিশেষ ভূমিকা পালন করবে। এ ক্ষেত্রে খেজুর, আম, কলা ইত্যাদি খেতে হবে।
লেখক : প্রধান পুষ্টিবিদ, ইউনাইটেড হাসপাতাল

শুক্রবার, ২৫ মে, ২০১৮

প্রচলিত ইফতারের পুষ্টিগুণ

আমাদের সামাজিক প্রেক্ষাপটে পবিত্র রমজান মাসে খাদ্যতালিকায় কিছু ভিন্নতা দেখা দেয়। কিছু প্রচলিত ইফতার যেমন- ছোলা, ডালের বড়া, বেগুনি, হালিম, খেজুর, দই-চিড়া,শরবত ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত হয়। এ ক্ষেত্রে অতিরিক্ত তেলে ভাজা খাবার আমাদের অবশ্যই বর্জন করতে হবে। এগুলো স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তবে এই প্রচলিত ইফতারের কিছু পুষ্টিগুণও রয়েছে। যেমন-
ছোলা
এটি একটি পুষ্টিকর খাবার, বিশেষ করে রমজান মাসের জন্য। ১৫০ গ্রাম ছোলাতে প্রায় ১৫০ কিলোক্যালরি শক্তি রয়েছে। এর থেকে আমাদের দৈনিক খাদ্য-আঁশের চাহিদার প্রায় ৪০ শতাংশ পেতে পারি। এ ছাড়া এতে রয়েছে প্রচুর প্রোটিন ও মিনারেল।
খেজুর
সেহরি ও ইফতার দুটি সময়ই খেজুর খুব পুষ্টিকর একটি খাবার। এতে গ্লুকোজ ও ফ্রুকটোজের চমৎকার একটি সংমিশ্রণ রয়েছে। অর্থাৎ খেজুরের একটি অংশ থেকে আমরা অতি দ্রুত শক্তি পাই। আবার কিছু অংশ ধীরে ধীরে দীর্ঘ সময় ধরে আমাদের শরীরে শক্তি প্রদান করতে থাকে। এটি সেহরির জন্য যথেষ্ট পুষ্টিকর। এ ছাড়া খেজুরে রয়েছে প্রচুর পটাশিয়াম । এটি আমাদের পানিশূন্যতা রোধ করতে সহায়তা করে।
দই-চিড়া
এটি রোজায় একটি পুষ্টিকর এবং উপাদেয় খাবার।এতে রয়েছে প্রোটিন ও কার্বোহাইড্রেট এর সুন্দর সংমিশ্রণ। ভিন্নধর্মী খাদ্যাভ্যাসের কারণে রোজায় আমাদের অনেকেরই হজমের সমস্যা দেখা দেয়। ইফতারে দই আমাদের হজম ভালো করতে সাহায্য করে। দই এ রয়েছে প্রবায়োটিক। এটি আমাদের অন্ত্র ও খাদ্যনালির জন্য উপকারী ব্যাকটেরিয়াদের সতেজ রাখতে সহায়তা করে। এটি রোজায় অত্যন্ত জরুরি। দই এ রয়েছে ট্রান্সফ্যাট ও  কার্বোহাইড্রেট। আর রয়েছে প্রচুর ভিটামিন ও ক্যালসিয়াম।
লেখক : প্রধান পুষ্টিবিদ, ইউনাইটেড হাসপাতাল

স্পেশাল আলু চাট

উপকরণ : সিদ্ধ আলু ৫০০ গ্রাম, পানি ঝরানো টক দই ২৫০ গ্রাম, কর্নফ্লাওয়ার আধা কাপ, পাকা টমেটো ২০০ গ্রাম, কচি শসা ২০০ গ্রাম, পেঁয়াজ কিউব করে কাটা ৪ টেবিল চামচ, ধনেপাতা কুচি ২ টেবিল চামচ, কাঁচা মরিচ কুচি ২ চা চামচ, টালা মরিচ গুঁড়া ১ চা চামচ, টালা জিরা গুঁড়া ১ চা চামচ, সাদা গোলমরিচ গুঁড়া ১ চা চামচ, চাট মসলা ১ টেবিল চামচ, বিট লবণ আধা চা চামচ, লবণ স্বাদ অনুযায়ী, চিনি ১ টেবিল চামচ, সয়াবিন তেল ১ কাপ।
যেভাবে তৈরি করবেন :
১. আলু সিদ্ধ করে গরম থাকতে চটকে নিন। এবার আলুর সঙ্গে অর্ধেক জিরার গুঁড়া, গোলমরিচ গুঁড়া, স্বাদমতো লবণ দিয়ে মেখে নিন।
২. আলুর মিশ্রণ থেকে পরিমাণমতো নিয়ে গোলাকার চ্যাপ্টা চাপ বানিয়ে কর্নফ্লাওয়ারে গড়িয়ে নিন। এরপর চুলায় তেল গরম হওয়ার পর দুই পিঠ বাদামি করে ভেজে নিন।
৩. পানি ঝরানো টক দই, বাকি জিরা গুঁড়া, চাট মসলা, টালা মরিচ গুঁড়া, চিনি, স্বাদমতো লবণ, বিট লবণ দিয়ে মেখে নিন।
৪. টমেটো ও শসা বিচি ফেলে ছোট কিউব করে কেটে নিন। টমেটো, শসা, পেঁয়াজ কিউব, কাঁচা মরিচ কুচি, ধনেপাতা কুচি সামান্য লবণ দিয়ে মেখে নিন।
৫. একটি ছড়ানো থালায় ভাজা চপগুলো রেখে প্রতিটির ওপর প্রথমে দইয়ের মিশ্রণ দিন। তার ওপর টমেটোর মিশ্রণ দিন। এবার সামান্য জিরা গুঁড়া ও চাট মসলা ওপরে ছড়িয়ে পরিবেশন
করুন মজাদার আলুর চাট।

বৃহস্পতিবার, ২৪ মে, ২০১৮

মুখের ক্যানসারের লক্ষণ কী?

ধূমপান করা, সুপারি, জর্দা, গুল, খৈনি ইত্যাদি গ্রহণ, মুখের ক্যানসার তৈরির অন্যতম কিছু কারণ। মুখের ভেতর অমসৃণ অবস্থা বিরাজ করা, বেশি লালা তৈরি হওয়া ইত্যাদি মুখের ক্যানসারের লক্ষণ। এ ছাড়া আরো কিছু লক্ষণ রয়েছে।
মুখের ক্যানসারের লক্ষণের বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩০৯৭তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. এস এম আনোয়ার সাদাত। বর্তমানে তিনি শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ওরাল অ্যান্ড মেকজিলোফেসিয়াল সার্জারি বিভাগে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : মুখের ক্যানসারের ক্ষেত্রে কী লক্ষণ প্রকাশ পায়?
উত্তর : মুখের ভেতর একটি অমসৃণ অবস্থা বিরাজ করে। এটা প্রাথমিকভাবে একেবারেই ব্যথামুক্ত থাকে। তাই অনেক সময় রোগীরা বুঝতে পারে না এটা সমস্যা। এটা দীর্ঘ সময় যদি অবহেলিত হয়, তাহলে আস্তে আস্তে এটি বড় হতে থাকে। ঘায়ের সৃষ্টি হয়। অনেক সময় মাংসপিণ্ড তৈরি হয়। সেখান থেকে রক্তপাতের মতো হয়, বেশি বেশি লালা তৈরি হয়। অনেক সময় মানুষ সচেতন হওয়ার কারণে আগেই চলে আসে আমাদের কাছে। আবার কখনো কখনো আমাদের কাছে অনেক দেরি করে আসে।

রবিবার, ২০ মে, ২০১৮

পেটে বাচ্চা থাকলে অ্যাজমা হলে কি করবেন?

পেটে বাচ্চা থাকলে অ্যাজমা হলে কি করবেন? অনেকে ফন করে আমাদের কাছে জানতে চেয়েছেন, যে তিনি গর্ভবতী। কিন্তু হঠাত করে শ্বাসকষ্ট বা অ্যাজমা শুরু হয়েছে। এখন পেতে যেহেতু বাচ্চা আছে তিনি কি ওষুধ খাবেন। গর্ভাবস্থায় ২২-২৪ সপ্তাহে কিংবা গর্ভাবস্থার শেষের দিকে অ্যাজমার উপসর্গ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তবে সন্তান প্রসবকালে অ্যাজমার উপসর্গ বৃদ্ধির কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

Asthma in Pregnancy

যাদের আগে থেকেই অ্যাজাম আছে গর্ভাবস্থায় তাদের এক-তৃতীয়াংশের অ্যাজমা বেড়ে যায়, এক-তৃতীয়াংশের অ্যাজমা উন্নতি হয়েছে এবং অবশিষ্টের অ্যাজমা পূর্বের মতোই থাকে।
কেন অ্যাজমা বেড়ে যায় : এর সঠিক কারণটি এখনও অজানা। তবে গর্ভবতীর পাকস্থলীতে চাপ বেড়ে যাওয়ার কারণে গ্যাস্ট্রোইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স (Gastroesophageal Reflux Disease (GERD) বেড়ে যায়। ফলে অ্যাজমার প্রবণতা ও বুক জ্বালা বেড়ে যায়। সাইনাসে ইনফেকশন, শ্বাসতন্ত্রে ভাইরাসজনিত সংক্রমণ ও করটিসোল হরমোনের কারণেও অ্যাজমার তীব্রতা বেড়ে যায়।

অ্যাজমা কী গর্ভস্থ শিশুর ক্ষতি করে : অ্যাজমা ঠিকমতো নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলে গর্ভবতী বা অনাগত সন্তানের ক্ষতির কোনো আশঙ্কাই থাকে না। অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণে রেখে স্বাস্থ্যবান শিশুর জন্ম দেয়া সম্ভব। কিন্তু অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণে না থাকলে জন্মের সময় শিশুর ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে কম হতে পারে। কারণ মায়ের রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যায় বলে শিশুর রক্তেও কমে যায়। এই অক্সিজেন স্বল্পতা গর্ভস্থ শিশুর বেড়ে ওঠার অন্তরায়
অ্যাজমা চিকিৎসা : ইনহেলারই (Inhaler) গর্ভবতীর জন্য কার্যকর ও নিরাপদ চিকিৎসা। চিকিৎসকের পরামর্শে অ্যালার্জি ভ্যাকসিনও কম ডোজে দেয়া যায়। অ্যাজাম রোগী শিশুকে বুকের দুধও খাওয়াতে পারবেন।
অ্যালার্জি ও অ্যাজমা রোগ বিশেষজ্ঞ
অধ্যাপক ডা. গোবিন্দ চন্দ্র দাস