প্রোটিনের ঘাটতি হলে চুলের স্বাস্থ্য খারাপ হয়ে পড়ে। ছবি : সংগৃহীত
টিস্যু গঠনের জন্য প্রোটিন জরুরি। কার্বহাইড্রেট ও চর্বির মতো প্রোটিন
শরীরে জমা হয় না। তাই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় প্রোটিন রাখা প্রয়োজন।
শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি বোঝার কিছু উপায় রয়েছে। এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্য বিষয়ক ওয়েবসাইট টপ টেন হোম রেমেডি।
১. দুর্বল পেশি
হঠাৎ পেশির দুর্বলতা ও ব্যথা প্রোটিনের ঘাটতির একটি বড় লক্ষণ। প্রোটিন
পেশির জ্বালানি। তাই এর ঘাটতি হলে পেশি বড্ড বেশি ভোগে, বিশেষ করে পুরুষ
প্রবীণ হলে এ সমস্যা বেশি হয়।
২. চুলের বাজে স্বাস্থ্য
চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে প্রোটিন জরুরি। এমনকি প্রতিটা চুলের জন্য
প্রোটিন প্রয়োজন। আর এর ঘাটতি হলে চুল পড়ার সমস্যা হতে পারে। তাই চুল বেশি
পড়তে থাকলে প্রোটিনের ঘাটতি হয়েছে কি না দেখুন।
৩. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া
খাবারে প্রোটিন কম থাকলে রোগ হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। প্রোটিন রোগ প্রতিরোধ
ক্ষমতা বাড়াতে কাজ করে। কারণ, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার কোষগুলো প্রোটিন দিয়ে
তৈরি।
৪. দুর্বল ও ভঙ্গুর নখ
দুর্বল ও ভঙ্গুর নখ শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি হওয়ার একটি অন্যতম লক্ষণ। আর
তাই শক্ত ও স্বাস্থ্যকর নখ পেতে খাদ্যতালিকায় প্রোটিন রাখুন।
৫. মেজাজের ওঠা-নামা
খাবারে প্রোটিনের ঘাটতি হলে মেজাজের ওঠা-নামা হয়। প্রোটিন মস্তিষ্কের
রাসায়নিক ডোপানিম ও নোরিপাইনফ্রিন উৎপাদনে সহায়তা করে। এ রাসায়নিকগুলো
আমাদের সুখি রাখতে কাজ করে।
প্রোটিন রয়েছে যেসব খাবারে
মাছ, ডিম, শিম জাতীয় খাবারের মধ্যে প্রোটিন রয়েছে। প্রোটিনের চাহিদা পূরণে এ খাবারগুলো খাদ্যতালিকায় রাখতে পারেন।
রক্তস্বল্পতা সবচেয়ে বেশি হয় আয়রনের ঘাটতি থেকে। ছবি : সংগৃহীত
রক্তস্বল্পতা বিভিন্ন কারণে হয়। এর মধ্যে রয়েছে, আয়রনের ঘাটতি, অপুষ্টি, পাইলসের কারণে রক্তক্ষরণ সমস্যা ইত্যাদি।
কোন ধরনের রক্ত স্বল্পতা বেশি হয়, এ বিষয়ে কথা বলেছেন ডা. গুলজার হোসেন।
বর্তমানে তিনি জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইন্সটিটিউটের হেমাটলজি বিভাগে
রক্তরোগ বিশেষজ্ঞ হিসেবে কর্মরত। এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন
অনুষ্ঠানের ৩৫৫৯তম পর্বে সাক্ষাতকারটি প্রচারিত হয়।
প্রশ্ন : কোন ধরনের রক্তস্বল্পতা নিয়ে রোগীরা আপনাদের কাছে সবচেয়ে বেশি আসে?
উত্তর : সবচেয়ে বেশি আসে আসলে আয়রনের ঘাটতি নিয়ে। বলা হয়ে থাকে, তৃতীয়
বিশ্বের দেশগুলোতে সাধারণত ৩০ থেকে ৪০ ভাগ মানুষ, আয়রনের ঘাটতি জনিত
রক্তস্বল্পতায় ভোগে। এর মানে এটি যথেষ্ট প্রচলিত একটি সমস্যা।
গর্ভাবস্থায় এটি খুব প্রচলিত ও গুরুত্বপূর্ণ। গর্ভাবস্থায় দেখা যায়,
সন্তান আসার কারণে বাড়তি ঝুঁকি বাড়ে। সেই অনুযায়ী যদি সরবরাহ না হয়, তাহলে
দেখা যায়, রক্তস্বল্পতা বা আয়রনের ঘাটতি হচ্ছে।
ডায়াবেটিক ফুটের চিকিৎসার বিষয়ে আলোচনা করেছেন ডা. আবদুল্লাহ আল গাদ্দাফী রানা ও ডা. সানজিদা হোসেন। ছবি : এনটিভি
ডায়াবেটিক রোগীর পা-কে ডায়াবেটিক ফুট বলা হয়। অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস
দীর্ঘদিন ধরে থাকলে পায়ে এক ধরনের ক্ষত তৈরি হয়। একে ডায়াবেটিক ফুট আলসার
বলে।
ডায়াবেটিক ফুটের আধুনিক চিকিৎসা কী, এ বিষয় নিয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন
স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩৫৪৪তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. আবদুল্লাহ আল
গাদ্দাফী রানা। বর্তমানে তিনি ডায়াবেটিক অ্যাসোসিয়েশন মেডিকেল কলেজ,
ফরিদপুরের অর্থোপেডিকস অ্যান্ড ফুট কেয়ার বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে
কর্মরত। প্রশ্ন : ডায়াবেটিক ফুটের আধুনিক চিকিৎসা কী? উত্তর : সারা বিশ্বেই ডায়াবেটিক ফুটের চিকিৎসাটা নতুন।
এই রোগটিও আমাদের কাছে নতুন। ডায়াবেটিক ফুট আলসার তৈরি হওয়ার আগে আমাদের
যে জিনিসটি করতে হবে, সেটি হলো ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ডায়েট
(খাদ্যাভ্যাস), ডিসিপ্লিন (নিয়মানুবর্তিতা) ও ড্রাগ (ওষুধ)—এ তিনটি ডি-এর
মাধ্যমে আমরা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করি।
আমরা যদি প্রতি সপ্তাহে অন্তত পাঁচ দিন ৪০ মিনিট করে হাঁটি, তাহলে
ব্যায়ামটা আমাদের হয়ে যাবে। এরপর আমাদের ওষুধ নিতে হবে। যদি ইনসুলিন দরকার
হয়, সেটি নিতে হবে। ওরাল মেডিকেশনের প্রয়োজন হলে, সেটি নিতে হবে। দ্বিতীয়
হলো, আমাদের ভাসকুলারিটি কেমন রয়েছে, সেটি দেখতে হবে। পায়ে রক্ত চলাচল ঠিক
রয়েছে কি না, দেখতে হবে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে সঙ্গে দেখতে হবে অবশ
ভাব রয়েছে কি না। প্রথমেই তো আর অবশ ভাব হয় না, জ্বালাপোড়া শুরু হয়। প্রধান
প্রতিরোধ হিসেবে আসলে সবচেয়ে আগে প্রয়োজন ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা।
লেবু স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী- এ কথা তো আর অজানা নয়। লেবু ত্বক ভালো
রাখে, শরীরের অ্যান্টি অক্সিডেন্টের চাহিদা পূরণ করে, এমনকি কিডনির পাথরও
প্রতিরোধ করে। এ ছাড়া এর আরো অনেক গুণ রয়েছে। লেবু কেন স্বাস্থ্যের জন্য ভালো, এ নিয়ে
এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানে কথা বলেছেন, নর্দান
ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পুষ্টিবিদ তাসনিম আশিক।
পুষ্টিবিদ তাসনিম আশিক বলেন, “ভিটামিন ‘সি’-এর খুব ভালো একটি উৎস লেবু।
ভিটামিন সি অ্যান্টি অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। অ্যান্টি অক্সিডেন্টের
অভাবে আমাদের ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যেতে পারে, বয়সের ছাপ দ্রুত পড়ে যেতে
পারে, ত্বক শুষ্ক হয়ে যেতে পারে। তবে লেবুর ভিটামিন সি, অর্থাৎ অ্যান্টি
অক্সিডেন্ট, ত্বককে স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না,
ত্বককে উজ্জ্বল রাখে। ট্যান পড়া থেকেও দূরে রাখে ভিটামিন সি।”
প্রতিদিন সকালে হালকা গরম পানিতে কিছুটা লেবুর রস যদি খাওয়া যায়, অর্থাৎ
সকালটা যদি শুরু করা যায়, এক গ্লাস লেবু পানি দিয়ে সেই ক্ষেত্রে সারা
দিনের হজমশক্তি ভালো থাকে জানিয়ে পুষ্টিবিদ তাসনিম আশিক বলেন, ‘লেবুর
ভিটামিন সি দেহের হরমোনকে সক্রিয় রাখতে সাহায্য করে। এটি উচ্চ রক্তচাপ
নিয়ন্ত্রণেও উপকারী।’
লেবু-পানি আমাদের শরীরকে আর্দ্র রাখতে সাহায্য করে জানিয়ে এই পুষ্টিবিদ
বলেন, ‘সেই সঙ্গে আয়রন শোষণেও সাহায্য করতে পারে লেবু। এ ছাড়া লেবুতে রয়েছে
সাইট্রিক এসিড। এটি কিডনির পাথর প্রতিরোধে উপকারী।’
পুষ্টিবিদ তাসনিম আশিক বলেন, ‘লেবু-পানি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি পানীয়।
তবে অবশ্যই একে চিনি ছাড়া পান করতে হবে। লেবুর ভিটামিন সি স্কার্ভি রোগ
প্রতিরোধে সাহায্য করে। এ ছাড়া সংক্রমণের মতো সমস্যাও লেবু দূর করে থাকে।’
সুতরাং শরীরকে আর্দ্র রাখতে, ভিটামিন সি-এর চাহিদা পূরণে লেবু খাদ্যতালিকায় রাখা যেতে পারে বলে পরামর্শ তাঁর।
দীর্ঘসময় কর্মক্ষম থাকতে প্রাপ্তবয়স্কদের সপ্তাহে অন্তত দুবার পেশির ও
অ্যারোবিক ব্যায়াম করার পরামর্শ দিয়েছেন ব্রিটেনের শীর্ষস্থানীয় চিকিৎসকরা। ব্রিটিশ চিকিৎসকদের নতুন এই নির্দেশনায় প্রথমবারের মতো যুক্ত হয়েছে এসব।
এতে গর্ভবতী ও সদ্য মা হওয়াদের জন্য নিরাপদে কাজ করার সীমানাও বেঁধে দেওয়া
হয়েছে। সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
এ ছাড়া ৬৫ বছরের বেশি বয়স্কদের ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে গিয়ে ব্যাথা পাওয়ার
শঙ্কা কমাতে নাচ, বউলস (এক ধরনের খেলা) অথবা তাই চি (এক ধরনের চীনা
আত্মরক্ষার কৌশল) অনুশীলনের পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ব্রিটিশ চিকিৎসকরা আরো জানিয়েছেন, শারীরিক পরিশ্রম করলে স্থুলতা, টাইপ-২
ডায়াবেটিস, হৃদরোগ ও অবসাদজনিত রোগ থেকে সুরক্ষা পাওয়া যায়।
সর্বশেষ বৈজ্ঞানিক প্রমাণাদির ভিত্তিতে শারীরিক কার্যক্রমের
পরামর্শনামায় হালনাগাদ সংস্করণটির সমন্বয় করেছেন যুক্তরাজ্যের শীর্ষ
চিকিৎসা কর্মকর্তারা।
নতুন এই পরামর্শনামায় চিকিৎসকরা যে বার্তাটি দিয়েছেন তা হলো—কোনো ধরনের
কায়িক পরিশ্রম না করার চেয়ে যে কোনো শারীরিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকা উত্তম,
বেশি করা গেলে আরো ভালো।
ব্রিটেনর প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা অধ্যাপক ডেইম স্যালি ড্যাভিস
জানান, তাঁর দেশের বেশিরভাগ শিশু ও প্রাপ্তবয়স্ক তেমন কোনো শরীরচর্চা করেন
না।
ড্যাভিস বলেন, ‘বাসে বা টিউবে যাতায়াতের সময় আমাদের নির্ধারিত গন্তব্যের
আগের স্টপে নেমে পড়ে বাকি পথটুকু হেঁটে যেতে হবে। লিফটে না উঠে সিঁড়ি
ব্যবহার করতে হবে। আমাদের আরো শারীরিক পরিশ্রম করতে হবে।’
এ ছাড়া পরামর্শনামায় ৫০ বছর বয়স থেকে স্বাভাবিক নিয়মে পেশি ও হাড় দূর্বল
হতে শুরু করা ঠেকাতে প্রাপ্তবয়স্কদের শারীরিক শক্তি ও ভারসাম্যের সমন্বয়ে
মনোযোগী হওয়ার কথা বলা হয়েছে।
কী পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা?
অনূর্ধ্ব-৫ বছর পর্যন্ত
নবজাতক : নিজ থেকে নড়াচড়া করে না এমন শিশুকে দিনে অন্তত ৩০ মিনিট উপুড় করে শুইয়ে রাখা।
১২ থেকে ৩৬ মাস : শিশু প্রতিদিন অন্তত ১৮০ মিনিট হাত-পা ছুড়ে খেলছে নিশ্চিত করা।
৩ থেকে ৪ বছর : প্রতিদিন অন্তত ৬০ মিনিট বিভিন্ন মাত্রার ব্যায়াম করাসহ প্রতিদিন ১৮০ মিনিট শারীরিক কর্মকাণ্ড।
৫ থেকে ১৮ বছর
সপ্তাহে প্রতিদিন অন্তত এক ঘণ্টা করে মাঝারি থেকে ভারি কাজের মাধ্যমে
শারীরিকভাবে সচল থাকতে হবে। যেমন, স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার সময় সচল থাকা।
পেশী ও হাড়ের কার্যক্ষমতা বাড়ানো। অলস সময় কমানো।
১৯ থেকে ৬৪ বছর
প্রতিদিনই শারীরিকভাবে সচল থাকার চেষ্টা করা। সপ্তাহে অন্তত দুই দিন
ভারী কিছু বহন করে পেশির কার্যক্ষমতা বাড়ানো। যেমন, বাজার করার পর ব্যাগ
বহন করা। এ ছাড়া ব্যায়ামের জন্য সময় বাড়ানো। প্রতি সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট
দ্রুত হেঁটে ও সাইকেল চালিয়ে অথবা অনুরূপ কাজ করে সচল থাকা। অথবা ৭৫ মিনিট
দৌড়ানো বা অনুরূপ কাজ করা। অলস সময় কমিয়ে ফেলা।
৬৫ বছরের বেশি
শারীরিকভাবে সচল থাকা অন্যান্য সব কাজের থেকে বেশি দরকারি। সপ্তাহে দুই
দিন পেশি শক্তি বৃদ্ধি করা ও ভারসাম্য রক্ষায় কাজ করা। সপ্তাহে অন্তত ১৫০
মিনিট মাঝারি কাজ করে শরীর সচল রাখা। যখনই সম্ভব সামান্য কাজ করা, কমপক্ষে
দাঁড়িয়ে হলেও শরীরকে সচল রাখা।
অন্তঃসত্ত্বা নারী
সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট মাঝারি কাজ করে শরীর সচল রাখা। ভারী কাজ করার
বাধ্যবাধকতা নেই। সপ্তাহে অন্তত দুবার পেশি শক্তির কার্যক্ষমতার জন্য কাজ
করা।
সন্তান জন্মদানের পর
সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট শারীরিকভাবে সচল থাকা। সপ্তাহে দুবার
পেশীশক্তির জন্য কাজ করা। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাড়িতেই প্রতিদিন সামান্য
ব্যায়াম করা।
শারীরিকভাবে অক্ষম ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে
যতটা সম্ভব অন্যসব মানুষের মতোই তাঁদের কাজ। এতে কোনো ঝুঁকি নেই।
রয়েল কলেজ অব পেডিয়াট্রিক্স অ্যান্ড চাইল্ড হেলথ থেকে ডা. ম্যাক্স
ডেভি বলেন, সব পরিবারকে অবশ্যই তাঁদের সন্তানদের রুটিন অনুযায়ী হেঁটে বা
সাইকেল চালিয়ে ব্যায়াম করানোর ক্ষেত্রে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। এতে বেড়ে ওঠার
ক্ষেত্রে মানসিক ও শারীরিকভাবে তারা সুস্থ জীবনযাপন করতে পারবে।
ওজন কমাতে খাবার খাওয়ার আগে সব সময় এক গ্লাস পানি পান করুন। ছবি : সংগৃহীত
মেদ কমানো আসলে খুব কঠিন কাজ নয়। একটু ইচ্ছে আর সামান্য ধৈর্য থাকলেই তা
সম্ভব। আর তা যদি ঘরোয়া উপায়ে হওয়া যায়, তাহলে তো মন্দ হয় না, কী বলুন?
ওজন কমানোর সহজ কিছু উপায় জানিয়েছে বার্তা সংস্থা ইউএনবি। আসুন জানি সেগুলো :
১. গ্রিন টি
গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন চার কাপ গ্রিন টি পান করলে প্রতি সপ্তাহে
অতিরিক্ত ৪০০ ক্যালরি পর্যন্ত ক্ষয় করা সম্ভব। গ্রিন টি-তে রয়েছে প্রচুর
পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এটি আমাদের দেহের ওজন ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
তাই প্রতিদিন গ্রিন টি অবশ্যই পান করুন।
২. তালিকা
যেদিন থেকে ওজন কমানোর কথা ভাববেন, সেদিন প্রথমেই কী কী খাবেন এবং কখন খাবেন, তার একটা তালিকা বানিয়ে নিন।
৩. নাচ
যদি আপনি নৃত্যশিল্পী নাও হন, তাহলে গানের সঙ্গে পায়ে তাল মেলান। ১০
মিনিট ধরে তাল মিলিয়ে দেখুন। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ৫৮ শতাংশ ক্যালরি ঝড়াতে
পারবেন।
৪. মসলাদার খাবার
শুধু সেদ্ধ খাবার কখনই খাবেন না। মসলা, যেমন—হলুদ, ধনে, জিরে গুঁড়া
ইত্যাদি মসলাগুলোকে কখনো খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দেবেন না। কারণ, এ মসলাই
আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করবে।
৫. ফোনে ঘুরে কথা বলুন
যখন ফোনে কথা বলবেন, তখন একটা জায়গায় বসে কখনই কথা বলবেন না। সব সময়
ঘুরে ঘুরে কথা বলুন। এইভাবে ১০ মিনিটে ৩৬ শতাংশ ক্যালরি নষ্ট করতে পারবেন।
৬. পানি পান করুন
পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন। পানি পানের কারণে আপনার শরীর থেকে অতিরিক্ত টক্সিন বের করে দেওয়া সম্ভব হবে।
৭. ঘর মুছুন
বাড়ির কাজ করুন। যেমন, ঘর মুছলে সবচেয়ে থেকে বেশি ক্যালরি নষ্ট করা যায়। এভাবে ৪২ শতাংশ ক্যালরি নষ্ট করা সম্ভব।
৮. চিনিকে না বলুন
চিনি খাওয়া একেবারে ছেড়ে দিন। এক চা চামচে মোট ১৬ শতাংশ ক্যালরি থাকে। তাই চায়ে বা দুধে কখনোই চিনি দিয়ে খাবেন না।
৯. তাড়াতাড়ি রাতের খাবার শেষ করুন
যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রাতের খাবার খেয়ে নিন। কারণ, রাতে খাবার খেয়েই শুয়ে
পড়লে মুটিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। আর রাতে যদি খিদে পায় তখন এক গ্লাস দুধ
খেতে পারেন।
১০. জগিং করুন
বাইরে দৌড়াতে যাওয়ার কোনো দরকার নেই। পারলে নিজের ঘরের মধ্যেই জগিং করতে পারেন।
১১. দিনে ঘুম বাদ দিন
রাতে আট ঘণ্টা ঘুমানো খুবই দরকার। কিন্তু কখনই দিনের বেলায় ঘুমাবেন না। এতে মুটিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়।
১২. আস্তে আস্তে খান
যখন খাবার খাবেন, তখন জলদি না খেয়ে আস্তে আস্তে খান। এতে আপনার পেট
ঠিকঠাকভাবে ভরবে। যদি খুব বেশি তাড়াহুড়ো করে খান, তাহলে প্রয়োজন থেকে অনেক
বেশি খাবার খেয়ে ফেলতে পারেন।
১৩. খাবার আগে পানি খান
খাবার খাওয়ার আগে সব সময় এক গ্লাস পানি খান। এ ছাড়া জাঙ্ক ফুড একেবারেই
খাবেন না। যেমন : ক্রিম বিস্কুট, বার্গার ইত্যাদি। যতটা পারবেন বাড়ির তৈরি
খাবার খান। এতে শরীর ভালো থাকবে এবং মুটিয়েও যাবেন না।
১৪. ছোট প্লেটে খান
প্লেট বদলে ফেলুন। যে প্লেটে খাবার খান, তার থেকে ছোট প্লেটে খান। এতে মনে হবে বেশি খেয়ে ফেলছেন। তাই কম খাবার খেতে শুরু করবেন।
শুধু সিনেমা হলে গেলেই পপকর্ন খাবেন না। যখনই খিদে পাবে, তখনই পপকর্ন
খেতে পারেন। এটি কম ক্যালরিযুক্ত খাবার। তাই মুটিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি কম।
সুন্দর, লবাণ্যময় ত্বক সবারই কাম্য। আর ত্বক ভালো রাখতে সঠিক
খাবার-দাবার বেশ জরুরি। ত্বক ভালো রাখতে কী কী খাবার খাওয়া প্রয়োজন এ বিষয়ে
কথা হয়, স্কিন স্কয়ার সেন্টারের চর্মরোগ বিভাগের পরামর্শক ডা. রেজা বিন
জায়েদের সঙ্গে।
ডা. রেজা বিন জায়েদ বলেন, ‘খাবারের সঙ্গে ত্বকের স্বাস্থ্য জড়িত।
ত্বক ভালো রাখতে বেটা কেরোটিন নামে খাদ্যের একটি উপাদান রয়েছে সেটি
খাওয়া যেতে পারে। গাজরের মধ্যে বেটা কেরোটিন রয়েছে। যেকোনো রঙিন ফল-সবজি
খাওয়া যেতে পারে। যেমন : লাল শাক, মিষ্টি কুমড়া, তরমুজ ইত্যাদি। এগুলোতে
বেটা কেরোটিন রয়েছে। বেটা কেরোটিন খেলে ত্বকের অনেক উপকার হয়। এগুলো যদি
খাদ্যাভ্যাসে রাখা যায়, তাহলে অনেক রোগ প্রতিরোধও করা যায়।’
আর যে ধরনের খাবার এড়িয়ে যেতে হবে সেটি হলো, ফাস্টফুড জানিয়ে ডা. রেজা
বিন জায়েদ বলেন, ‘ফাস্টফুড বলতে আমি বলছি ভাজাপোড়া খাবার। সেটি ঘরের হতে
পারে, বাইরের হতে পারে। আরো রয়েছে কনফেকশনারির কিছু আইটেম। যেমন : চকোলেট,
সফট ড্রিংস। এসব জিনিস ত্বকের জন্য ভালো নয়। এগুলো ফাস্টফুডের বিভিন্ন
ম্যানু।’ এসব খাবার পারত পক্ষে এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি
রাখার বিষয়ে আলোচনা করেছেন ডা. ফারিয়াল হক ও ডা. সানজিদা হোসেন। ছবি : সংগৃহীত
বয়স বাড়লে ত্বকে বলিরেখা পড়া, ত্বক ঝুলে পড়া বা চামড়া কুঁচকে যাওয়া
ইত্যাদি সমস্যা হয়। তবে এসব এড়িয়েও অনেকে দিব্যি বয়সকে ধীর গতির করে নিজেকে
আকর্ষণীয় রাখতে পারেন।
বয়স ধরে রাখা খুব জাদুকরি কিছু নয়। জীবনধারায় কিছু পরিবর্তন আনলে সহজে বয়স ধরে রাখা যায়। কীভাবে বয়স ধরে রাখবেন?
এ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩৫৩৩তম
পর্বে কথা বলেছেন ডা. ফারিয়াল হক। বর্তমানে তিনি বনানি প্রেসক্রিপশন
পয়েন্ট, বনানিতে চর্ম ও যৌন বিভাগে পরামর্শক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : বয়স ধরে রাখার জন্য কী কী প্রক্রিয়া রয়েছে বা বাংলাদেশে আপনারা কী কী কাজ করছেন?
উত্তর : আসলে বয়সকে ধরে রাখা যায় না। এটা সম্ভব নয়। সময়কে তো আমরা বেঁধে
রাখতে পারব না। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সবকিছু ক্ষয় হবে। কিন্তু আমরা যেটি করতে
পারি প্রক্রিয়াটিকে ধীর করতে পারি। এর মধ্যে বিভিন্ন ধরনের উপাদান রয়েছে।
প্রথম হলো, ডায়েট। খাদ্যাভ্যাসে আমরা কিছু পরিবর্তন আনতে পারি, যেগুলো নিয়ে
আজ আমরা আলোচনা করব। এরপর ঘুম ও ব্যায়াম। এরপর রয়েছে কিছু ত্বক
পরিচর্যাকারী প্রক্রিয়া। এ সম্পর্কে আমাদের দেশের মানুষের আসলে ধারণা খুব
কম।
প্রশ্ন : আপনি প্রথমে বলেছেন খাদ্যাভ্যাসের কথা। কী কী ধরনের খাবার আসলে খেতে হবে?
উত্তর : কিছু খাবার কমিয়ে আনতে হবে। সেগুলো হলো, চিনি ও লবণ। এ দুটোকে
অবশ্যই কমিয়ে আনতে হবে। চিনি সাধারণত অনেক দ্রুত গ্লাইকেশনে সাহায্য করে।
এতে আমাদের বয়স বাড়ার প্রক্রিয়াটা খুব তাড়াতাড়ি বাড়ে। লবণটা খুব তাড়াতাড়ি
চোখের নিচে পানি জমা, ফোলাভাব ইত্যাদি সমস্যাকে তরান্বিত করে। এ জন্য এ
দুটোকে আমাদের কমিয়ে আনতে হবে।
আর খেতে হবে কী কী? সবই খেতে হবে। এর মধ্যে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ
খাবারগুলো বেশি খেতে হবে। যেমন শাক-সবজি, আর রঙিন ফলমূল। পর্যাপ্ত পরিমাণ
পানি পান করতে হবে। তবে একটি জিনিস আমরা ভুল করি। হঠাৎ করে হয়তো ওজন
কমাচ্ছি, ফল খাচ্ছি, পানি খাচ্ছি, সবজি খাচ্ছি। কিন্তু আমরা ডিমকে এড়িয়ে
চলি। মাংসটা এড়িয়ে চলি। এটা সবচেয়ে ভুল। ত্বকের জন্য কোলাজেন তৈরি হওয়া খুব
জরুরি। আর কোলাজেনটা তৈরি হয়ই প্যাপটাইস থেকে। প্যাপটাইটস দুধে থাকে,
মাংসে থাকে। তাই এগুলো কখনো বাদ দেওয়া যাবে না। আমরা ডায়েট অবশ্যই করব,
কিন্তু এর মধ্যে সবকিছু থাকতে হবে। এরপর ব্যায়াম করতে হবে। যেভাবেই হোক,
সারা দিনে নিজের জন্য আধা ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টা ব্যায়াম খুব জরুরি। আমাদের
শরীরে যে অক্সিডেন্ট ঢুকছে, আমরা যে খাচ্ছি, এগুলো বের করে দেওয়ার জন্য
অক্সিজেন জরুরি। ঘাম হওয়া জরুরি।
আমরা এখন সবাই কিন্তু গাড়িতে বসে আছি, জ্যামে বসে আছি। এসি ছাড়ছি। আসলে ঘাম হওয়াটা খুব জরুরি।
প্রশ্ন : দৈনন্দিন ত্বকের যত্ন কীভাবে করতে পারি?
উত্তর : আমরা সবাই কম বেশি জানি, ক্লিনজিং, টোনিং, ময়েশ্চারাইজিং। একজন
সাধারণ মানুষও সেটা বোঝে। আমি নিয়মিত যে পণ্যগুলো ব্যবহার করছি, এর মধ্যে
পাঁচটি উপাদান থাকতে হবে, অ্যান্টিঅ্যাজিংয়ের ক্ষেত্রে। এই পাঁচটি উপাদানকে
আমি নাম দিয়েছি অ্যান্টিঅ্যাজিং সুপারস্টার। বিভিন্ন গবেষণায় দেখেছি,
বিভিন্ন দেশে আমি প্রশিক্ষণ নিয়েছি, দেখেছি প্রত্যেকটি মডার্ন দেশে এই
পাঁচটা জিনিসের প্রতি তারা খুব জোর দেয়। বিশেষ করে অ্যান্টি অ্যাজিংয়ের
ক্ষেত্রে। এর মধ্যে আমাদের দেখতে হবে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ভিটামিন সি যেটি,
সেটি। আমরা যদি একটি ভিটামিন সি সিরাম নিয়মিত ব্যবহার করতে পারি, তাহলে
সেটি আমাদের জন্য উপকারী হবে। দ্বিতীয় হলো, রেটিনলস। আমরা যে ধরনের
ক্রিমগুলো ব্যবহার করছি ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম হিসেবে সেটির মধ্যে অবশ্যই যেন
রেটিনল থাকে। এটি আমাদের বয়স বাড়ার প্রক্রিয়াটাকে অনেক কমিয়ে আনতে সাহায্য
করে। কারণ, রেটিনল কোলাজেন বাড়াতে সাহায্য করে। তাই এ ক্ষেত্রে রেটিনলটা
ক্রিমের মধ্যে থাকাটা জরুরি। তৃতীয় আমি বলব, প্যাপটাইটস। আমরা যেই ধরনের
ক্রিম বা ফেসওয়াস ব্যবহার করছি না কেন, এর মধ্যে যেন হেক্সা পেপটাইটস,
পেন্টা পেপটাইস এই ধরনের জিনিসগুলো থাকে। সাধারণত আমরা কী করি? হয়তো
অনলাইনে কোনো পণ্য পছন্দ হচ্ছে কিনে ফেলছি। কিন্তু উপাদানগুলো দেখছি না।
এখন সবার ইউটিউব রয়েছে। সবার একটু একটু করে জানার চেষ্টা করা উচিত।
প্যাপটাইস যদি আমাদের দৈনন্দিন মেকআপের মধ্যে থাকে, এগুলো
অ্যান্টিঅ্যাজিংয়ে সাহায্য করে। এটি গেল তিন নম্বর। চার নম্বর হলো,
হাইলোরোনিক এসিড। এটি আমাদের ত্বকে, শরীরে এমনি তৈরি হয়। এটি যদি আমরা
বাইরে থেকে দিতে থাকি, তাহলে অনেক ক্ষেত্রে বয়সটা বাড়ার গতিকে ধীর করে। এবং
শেষে হলো সানস্ক্রিন। সানস্ক্রিন তো অবশ্যই আমাদের ব্যবহার করতে হবে।
সূর্য থেকে সুরক্ষা অবশ্যই দরকার।
প্রশ্ন : কার জন্য কোন ধরনের উপাদান ব্যবহার করা উচিত, সেটি আপনারা কীভাবে বোঝেন?
উত্তর : ত্বক অনুযায়ী ও বয়স অনুয়ায়ী আমরা পরামর্শ দেই।
এগুলো তো আমাদের প্রতিদিনের যত্ন। এ ছাড়া আমাদের কিছু প্রক্রিয়া রয়েছে।
প্রশ্ন : রোগীরা কোন কোন সমস্যা নিয়ে আপনাদের কাছে যায়?
উত্তর : আমাদের দেশে ইদানীং দেখা যাচ্ছে, ৩৫-এর ওপর হয়ে গেলে,
বলিরেখাগুলো খুব তাড়াতাড়ি চলে আসে। আমরা তো এখন প্রতিদিন অনেক মেকআপ করছি।
ফাউন্ডেশন দিচ্ছি, পাউডার দিচ্ছি। অনেক ধরনের মেকআপ আমাদের করতে হচ্ছে।
এগুলোর কিন্তু একটি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। এর কারণে কম বয়সেই বলিরেখা
চলে আসছে। একজন ৩৫ বছরের ছেলে বা মেয়ের যদি বলিরেখা দেখা দেয়, তাহলে দেখা
যায়, তাকে তার বয়সের তুলনায় অনেক বয়স্ক দেখাচ্ছে। এই ক্ষেত্রে আমাদের খুব
চমৎকার একটি চিকিৎসা রয়েছে।
প্রশ্ন : বলিরেখা কমানোর চিকিৎসা কী?
উত্তর : এটি হলো বোটক্স। এটি খুব জনপ্রিয় একটি পদ্ধতি। বোটক্স
অ্যান্টিঅ্যাজিংয়ের জন্য সবচেয়ে প্রচলিত চিকিৎসা পদ্ধতি। আমরা যেই ওষুধটা
ইনজেকশনের মাধ্যমে দেই, ইনজেকশন খুব ছোট ইনসুলিন সিরিঞ্জের মতো। এটি ছোট
একটি সুঁই দিয়ে করা হয়। ত্বকে অ্যানেসথেটিক ক্রিম লাগিয়ে নিয়ে আমরা এটি
দেই। যেই মেডিসিনটা আমরা দেই, এটি কেবল বিশুদ্ধ প্রোটিন। সাধারণত আমরা বলি,
এটি চার থেকে ছয় মাস থাকবে। পঁয়ত্রিশের পরে কেউ বলিরেখা নিয়ে এলে আমরা এটি
পরামর্শ দেই। সাধারণত বলি বছরে দুবার দিতে। দুবারের বেশি করা লাগে না।
প্রশ্ন : রোগী নির্বাচনের ক্ষেত্রে কী কী দেখেন?
উত্তর : রোগীর বলিরেখা অবশ্যই ডায়নামিক হতে হবে। ধরুন, আমি ভ্রু
কুঁচকাচ্ছি, আমার অনেক বলিরেখা পড়ছে। তখনই যদি আমরা বোটক্স শুরু করে দেই,
তার যেই বলিরেখাটা স্থায়ী হয়ে যেত, সেটি স্থায়ী হবে না। যদি আমরা আগে শুরু
করে দেই প্রক্রিয়াটা, তাহলে তিনি ৫০-৬০ বছর পর্যন্ত অনেক তরুণ থাকবেন।
প্রশ্ন : যাদের ক্ষেত্রে স্থায়ী হয়ে যায়, তাদের জন্য আশার কোনো কথা রয়েছে কী?
উত্তর : আশার কথা রয়েছে। আমরা এই ক্ষেত্রে ত্বকটা দেখি। ত্বকটা যদি একটু
টাইট থাকে, এরপর আমরা বয়সটা দেখি। ত্বকের নিচে চর্বির পরিমাণটা দেখি।
এখানে অনেক পর্যবেক্ষণের বিষয় রয়েছে। সেগুলো দেখে আমরা পর্যবেক্ষণ করি। এটি
১০ থেকে ১৫ মিনিটের একটি প্রক্রিয়া। খুবই সস্তায় আমরা করি। অনেক সফলভাবে
আমরা করছি।
প্রশ্ন : ক্র্যাশ ডায়েটের কারণে অনেক সময় দ্রুত বলিরেখা পড়ছে, চুল পড়ছে তাদের ক্ষেত্রে কী পরামর্শ?
উত্তর : একটি জিনিস দেখুন, আমাদের নানি- দাদিদের কিন্তু এত সমস্যা ছিল
না। আমাকে ডায়েট করতে হবে, আমাকে শুকাতে হবে। আমাদের এখন কিন্তু সন্তুষ্টি
খুব কম। কেউই আমরা সন্তুষ্ট নই। তখনকার সময়ের কথা যদি চিন্তা করেন, তখন
সবাই বিশুদ্ধ দুধ খেত। বিশুদ্ধ ঘি খাচ্ছে। খাঁটি ঘি, খাঁটি মাছ সবকিছুই
খাচ্ছে। ওই যে বললাম প্রধান উপাদান যেগুলো সেগুলো কিন্তু বাদ দেওয়া যাবে
না। দুধ, ঘি, তেল সবই খেতে হবে।
যদি আমরা একে বাদ দিয়ে দেই, আমাদের ত্বকের নিচে যে চর্বি থাকে, সেটি
যদি বজায় না থাকে, তখন সেই উজ্জ্বলতাটা আসবে না। যতই শুকিয়ে যান না কেন
শুকনা লাগছে আপনাকে, হয়তো বা স্লিম লাগছে, কিন্তু উজ্জ্বলতা কিন্তু দেবে
না। উজ্জ্বলতার জন্য অবশ্যই পেপটাইটস খেতে হবে।